এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান

শিক্ষকদের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দিতে বছরে খরচ হবে ২৬০০ কোটি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:২৬ পিএম, ২৮ আগস্ট ২০২৫
জাতীয়করণ, ভাতা বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন দাবিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের সমাবেশ, ফাইল ছবি

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা মূল বেতনের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়ার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন। গত ১৩ আগস্ট ঢাকায় মহাসমাবেশ করে তারা এ দাবি জানান। সেদিনই শিক্ষা উপদেষ্টা সচিবালয়ে শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে শিক্ষকরা উপদেষ্টার কাছে ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়ার দাবি তুলে ধরেন।

বৈঠকে সেদিন শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষকদের কাছে জানতে চান ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দিলে কত খরচ হবে। শিক্ষকরা এ হিসাব কষে দ্রুত জানানোর কথা জানিয়ে আসেন। এর প্রেক্ষিতে সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ২০ শতাংশ বাড়িভাড়ার হিসাব লিখিতভাবে জানিয়েছে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট’।

শিক্ষকদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী- বর্তমানে দেশে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী সাড়ে ৫ লাখ। তারা এখন এক হাজার টাকা হারে বাড়িভাড়া ভাতা পাচ্ছেন। অর্থাৎ, তাদের বাড়িভাড়া ভাতা দিতে প্রতিমাসে ৫৫ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে সরকারের।

কর্মরত সাড়ে ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীকে ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দিতে মাসে অতিরিক্ত প্রয়োজন হবে ২১৬ কোটি দুই লাখ টাকা। আর বছরে প্রয়োজন হবে ২ হাজার ৫৯২ কোটি ২৪ লাখ টাকা।

এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোট এ হিসাব উপস্থাপন করে তাদের দাবির অংশে উল্লেখ করেছে, সব শিক্ষক-কর্মচারীকে ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দিতে হবে। কারও মূল বেতন কম হলে যদি বাড়িভাড়া ভাতা কম হয়, সেক্ষেত্রেও তাকে কমপক্ষে ৩ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ভাতা দিতে হবে।

জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের সদস্যসচিব অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টা ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া ভাতার হিসাব উপস্থাপন করতে বলেছিলেন। আমরা সেটা তৈরি করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবকে দিয়েছি। আশা করি, সরকার আমাদের এ হিসাব যাচাই করে দ্রুত বাড়িভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দেবে।

এদিকে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের শতকরা হারে বেতন বৃদ্ধি করতে আর্থিক ব্যয় বিবরণী পাঠাতে তিন দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত ২৬ আগস্ট মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেখানে এমপিও শিক্ষক-কর্মচারীদের ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ও সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকা এবং ১৫ ও ১০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া ও সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা করে দেওয়ার ক্ষেত্রে কত খরচ হবে, তার ভিন্ন ভিন্ন হিসাব চাওয়া হয়েছে। মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরেও পৃথকভাবে এ চিঠি পাঠানো হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, শিক্ষকদের দাবি অনুযায়ী শতকরা হারে বাড়িভাড়া বৃদ্ধির জন্য কত টাকা প্রয়োজন, সে সংক্রান্ত একটি খসড়া জাতীয়করণপ্রত্যাশী জোটের কাছ থেকে তারা পেয়েছেন। তবে যে হিসাব উত্থাপন করা হয়েছে, তা অসম্পূর্ণ। গ্রেড অনুযায়ী শিক্ষকদের বেতন আলাদা। ফলে সব মিলিয়ে কত টাকা লাগবে, সে সংক্রান্ত একটি হিসাব অধিদপ্তরগুলোকে পাঠাতে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব বলেন, মাউশিতে যে চিঠি পাঠানো হয়েছে, সে একই চিঠি কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের মাধ্যমে পৃথকভাবে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে পাঠানো হবে। তিন দপ্তর থেকে আর্থিক ব্যয়বিবরণী পাওয়ার পর প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

মাউশিতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের বাড়িভাড়া ভাতা শতকরা হারে দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রহণের জন্য শতকরা ২০ শতাংশ; ন্যূনতম ৩ হাজার টাকার নিচে নয় ও শতকরা ১৫ শতাংশ ও ১০ শতাংশ ন্যূনতম দুই হাজার টাকার নিচে নয়; হারে বাড়িভাড়া ভাতা দেওয়ার মাসিক ও বাৎসরিক আর্থিক সংশ্লেষ বিবরণী টেবিল আকারে প্রস্তুতপূর্বক পাঠানোর জন্য বলা হলো।

এএএইচ/কেএইচকে/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।