ব্যতিক্রম হতে পারে এবারের এইচএসসির ফল

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:৪৪ এএম, ১৬ অক্টোবর ২০২৫
ফাইল ছবি

করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালে দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় বড় ধাক্কা আসে। মাসের পর মাস বন্ধ থাকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এলোমেলো হয়ে পড়ে পরীক্ষার সূচিও। এরপর পাঁচ বছরেও স্বাভাবিক সময়সূচিতে ফিরতে পারেনি শিক্ষাব্যবস্থা। কখনও অটোপাস, কখনও সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে পরীক্ষা হয়েছে। ফলে ফলাফলে দেখা গেছে উল্লম্ফন।

সবশেষ ২০২৪ সালে সব বিষয়ে পূর্ণমান, পূর্ণ সিলেবাস ও পূর্ণ সময়ে পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। তবে জুলাই আন্দোলনের কারণ তাতে ছেদ পড়ে। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে কিছু পরীক্ষা বাতিল করা হয়। ফল প্রকাশ করা হয় সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে। ফলে গতবারও স্বাভাবিক ধারায় ফেরেনি এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল।

পাঁচ বছর পর এবার স্বাভাবিক ধারায় ফিরছে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা। সব বিষয়ে পূর্ণমান, পূর্ণ সময় ও পূর্ণ সিলেবাসে এবার পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ‘সহায়নুভূতির’ নম্বরও না দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এর প্রভাব পড়ছে ফলাফলে। এসএসসির পর এইচএসসিতেও এবার নিম্নমুখী ফলাফল হতে পারে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা বোর্ডগুলোর কর্মকর্তারা।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির জাগো নিউজকে বলেন, সব শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল প্রস্তুত। সকাল ১০টায় একযোগে সব বোর্ড থেকে ফল প্রকাশ করা হবে। শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও অনলাইনে ফলাফল দেখতে পারবেন।’

ফলাফল কেমন হতে পারে-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ফল প্রকাশের পরই বলা যাবে কেমন হবে; আগে বলা তো সম্ভব নয়। তবে এবার পূর্ণ সময়, পূর্ণমান ও পূর্ণ সিলেবাসে স্বাভাবিক ধারায় পরীক্ষা হয়েছে। সেক্ষেত্রে করোনাকালে যেমন ফলাফল হয়েছিল, তার চেয়ে ব্যতিক্রম হতে পারে। তবে সেটা ফল প্রকাশের পরই বোঝা যাবে।’

ফল খারাপ হলেও ভেঙে পড়া যাবে না
রাজধানীর একটি কলেজের প্রভাষক আতিকুর রহমান বলেন, ধারণা পাচ্ছি, এসএসসির মতো এবার এইচএসসিতেও পাসের হার ও জিপিএ-৫ কমতে পারে। তবে এ পরীক্ষা যে জীবনের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করে দেবে, তা নয়। এবার পুরোপুরি মেধার ভিত্তিতে ফলাফল প্রকাশ করায় সবার প্রকৃত অবস্থাটা জানা যাবে। সে অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিলে শিক্ষার্থীরা ভালো ক্যারিয়ার গড়তে পারবে বলে আশা করি।

তাহেরা আক্তার রূপা নামে আরেক অভিভাবক বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রে এসএসসি ও এইচএসসির ভালো ফলাফল সহায়ক হিসেবে কাজ করে। এজন্য আমার মেয়েটা উদ্বিগ্ন। তবে আমি বলেছি, কোনো কারণে যদি এইচএসসির ফল খারাপও হয়, তাতে ভেঙে পড়া যাবে না। ভর্তির জন্য ভালো করে প্রস্তুতি নিলে সেটা পুষিয়ে নেওয়া যাবে।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের শিশু ও কিশোর মনোরোগবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. সাদিয়া আফরিন বলেন, অনেক শিক্ষার্থী মনে করে আমার বন্ধু বা বান্ধবী পাস করে গেছে বা ভালো ফল করে ফেলেছে; কিন্তু আমি পারলাম না। নিজের ওপরে একটা দায়বদ্ধতা অবচেতন মনে ভেবে ফেলে। সে হয়তো ভাববে কীভাবে সে সমাজে মুখ দেখাবে? এজন্য ফল প্রকাশের আগে ও পরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখতে হবে।

‘শিক্ষকদেরও অনুপ্রেরণামূলক কথা বলতে হবে। তাদের ইমোশনালি স্ট্রাগল বা সেলফ স্টিম বা আত্মবিশ্বাসের জায়গাগুলোতে নিয়ে সচেতন থাকতে হবে। তাহলে এ ধরনের ঘটনা কমে যাবে’ যোগ করেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. সাদিয়া আফরিন।

এএএইচ/এমকেআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।