বাংলার গল্প যাচ্ছে রটারড্যামে, এ উৎসব কেন গুরুত্বপূর্ণ

বিনোদন প্রতিবেদক
বিনোদন প্রতিবেদক বিনোদন প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:০৭ এএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫

ইউরোপের দেশ নেদারল্যান্ডসে যাচ্ছে শুদ্ধ বাংলাদেশি তিন সিনেমা। দেশটির রটারড্যাম চলচ্চিত্র উৎসবে নিজস্ব গল্প ও সংস্কৃতির কাহিনি নিয়ে যাওয়াটা এই সময়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু রটারড্যাম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল কেন গুরুত্বপূর্ণ?

নেদারল্যান্ডসের রটারড্যাম ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (আইএফএফআর) শুধু একটি চলচ্চিত্র উৎসব নয়। এটি নতুন ভাবনা, নতুন ভাষা আর সাহসী নির্মাতাদের জন্য একটি নিরাপদ মঞ্চ। ১৯৭২ সালে যাত্রা শুরু করা এই উৎসবটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন হুবার্ট বালস। তার লক্ষ্য ছিল মূলধারার বাইরে থাকা সিনেমাগুলোকে বিশ্বদর্শকের সামনে আনা।

এই উৎসবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, এখানে বড় বাজেট বা তারকা নয়, নিরীক্ষাধর্মী গল্প ও নির্মাতার দৃষ্টিভঙ্গি বেশি গুরুত্ব পায়। এশিয়া, আফ্রিকা, লাতিন আমেরিকার অনেক তরুণ নির্মাতা প্রথম আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পান রটারড্যাম থেকেই।

রটারড্যামে কী কী হয়
এখানে থাকে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগ, যেখানে প্রথম বা দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতারা অংশ নেন। থাকে ‘টাইগার অ্যাওয়ার্ড’ যা নতুন নির্মাতাদের জন্য অত্যন্ত সম্মানজনক এক পুরস্কার। পাশাপাশি থাকে ডকুমেন্টরি, শর্টফিল্ম, ভিডিও আর্ট, ইনস্টলেশন এবং চলচ্চিত্র নিয়ে গভীর আলোচনা ও ওয়ার্কশপ।

এই উৎসবে যেসব খ্যাতিমান নির্মাতার সিনেমা দেখানো হয়েছে, তাদের অনেকেই আজ বিশ্বসিনেমার গুরুত্বপূর্ণ নাম।

আপিচাতপং উইরাসেথাকুল (থাইল্যান্ড): তার নিরীক্ষামূলক চলচ্চিত্র রটারড্যামে আলোচনার জন্ম দেয়। বর্তমানে তিনি সমসাময়িক আর্ট-হাউস সিনেমার অন্যতম প্রভাবশালী নির্মাতা।

বেলা তার (হাঙ্গেরি): তার দীর্ঘ ও ধীরগতির সিনেমা এখানে নতুন দর্শক পেয়েছে। তিনি এখন সিনেমা বানানো বন্ধ রেখে পড়াচ্ছেন।

জিয়া জাংকে (চীন): রটারড্যামে প্রদর্শিত তার প্রাথমিক কাজগুলো চীনের সামাজিক পরিবর্তনকে বিশ্বে তুলে ধরতে সাহায্য করেছে। তিনি এখন আন্তর্জাতিকভাবে পুরস্কৃত এক নির্মাতা।

এই সিনেমাগুলোর প্রভাব কী
রটারড্যাম দেখিয়েছে, সিনেমা শুধু বিনোদন নয়, এটি হতে পারে রাজনীতি, স্মৃতি, নিঃশব্দ মানুষের ভাষা। এই উৎসব বিশ্ব চলচ্চিত্রকে শিখিয়েছে, ঝুঁকি নিতেই হয়। নয়তো নতুন কিছু জন্মায় না।

বাংলাদেশের তিন সিনেমা
এ বছর বাংলাদেশের তিন সিনেমা যাচ্ছে রটারড্যাম উৎসবে। সেগুলোর মধ্যে ‘দেলুপি’, ‘মাস্টার’ ও ‘রইদ’, পরিচালনা করেছেন যথাক্রমে মোহাম্মদ তাওকীর ইসলাম, রিজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত ও মেজবাউর রহমান সুমন। ‘দেলুপি’ সিনেমাটি জায়গা করে নিয়েছে উৎসবের ব্রাইট ফিউচার বিভাগে। এই বিভাগে নির্মাতাদের বানানো প্রথম ও দ্বিতীয় সিনেমা নির্বাচিত হয়। ‘রইদ’ প্রতিযোগিতা করবে উৎসবের টাইগার কম্পিটিশন বিভাগে আর ‘মাস্টার’ লড়বে বিগ স্ক্রিন কম্পিটিশন বিভাগে।

২০২৬ সালের ২৯ জানুয়ারি নেদারল্যান্ডসে শুরু হবে রটারড্যাম উৎসব। চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

আরএমডি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।