এত পুরস্কার পেয়ে চমকে গেছি : রিয়াজুল রিজু

তরুণ চলচ্চিত্র নির্মাতা রিয়াজুল রিজু। তার ক্যারিয়ারে প্রথম পরিচালিত ছবি ‘বাপজানের বায়স্কোপ’ ২০১৫ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার হিসেবে যৌথভাবে নির্বাচিত হয়েছে। একইসঙ্গে যৌথভাবে রিজু পাচ্ছেন জাতীয় চলচ্চিত্র নির্মাতার পুরস্কার। এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে সর্বাধিক ৯টি ক্যাটাগরিতে ‘বাপজানের বায়স্কোপ’ জাতীয়ভাবে পুরস্কার পাওয়ায় গৌরব অর্জন করে।
তথ্য মন্ত্রণালয় সার্বিক দিক বিবেচনা করে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৫’ প্রদানের ঘোষণা করে বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল)। শ্রেষ্ঠ নির্মাতার পুরস্কার অর্জন করার পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়া সন্ধ্যায় রিজু কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে...
জাগো নিউজ : গাড়ির আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কোথায় আপনি?
রিজু : আমি রাস্তায় আছি গাড়িতে। হাতে কিছু কাজ আছে তাই টাঙ্গাইল যাচ্ছি, ফিরব শনিবার।
জাগো নিউজ : এবারের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে আপনি যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও আপনার পরিচালিত ‘বাপজানের বায়স্কোপ’ ছবিটি ৯টি ক্যাটাগরিতে সর্বাধিক পুরস্কার অর্জন করেছে। খবর পেয়েছেন?
রিজু : হ্যাঁ ভাই, সন্ধ্যায় চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড থেকে আমাকে ফোনে করে জানানো হয়েছে।
জাগো নিউজ : আপনাকে অভিনন্দন। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত...
রিজু : অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এবং জাগো নিউজকে। আশা রাখবেন সবসময় যেন এভাবে চলচ্চিত্রকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারি।
জাগো নিউজ : আগে থেকে কিছু জানতেন না। কোনো আলোচনা বা সম্ভাবনা...
রিজু : আগে থেকে এর-ওর মুখে শুনেছিলাম। উড়ো কথা সেখানে কান দেইনি। তবে এতগুলো বিভাগে স্বীকৃতি পাব ভাবিইনি। চমকে গিয়েছি। আমার ছবির পুরো টিমকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সবাই মিলে সততা নিয়ে চেষ্টা করেছিলাম বলেই এত ভালো কিছু হয়েছে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার কর্তৃপক্ষকেও অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই।
জাগো নিউজ : প্রথম ছবি নির্মাণেই শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতার স্বীকৃতি পাচ্ছেন। অনুভূতি জানতে চাই...
রিজু : আমি যখনই কনফার্ম হয়েছি আমি এবারের শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্মাতার পুরস্কার পাচ্ছি তখনই সৃষ্টিকর্তার কাছে শুকরিয়া জ্ঞাপন করেছি। পরিশ্রম, অধ্যবসায়, সততা নিয়ে কাজ করেছি বলেই স্বীকৃতি পেলাম। তবে আরেকটা কথা না বললেই নয়, তিনজন মানুষের কথা এই মুহূর্তে ভীষণ মনে পড়ছে। তারাই আমার কাজের উৎসাহ, উদ্দীপনা, প্রেরণার মূল স্থান। আমার ওস্তাদ শাহেদ শরিফ খান, আমার বাবা ডাক্তার জি মওলা ও এই ছবির এক্সিকিউটিভ প্রযোজক এম এ হোসেন মঞ্জু। তাদের কাছে আমি চিরকৃতজ্ঞ। এই তিনজন মানুষ আমার পাশে না থাকলে, আমাকে সাহস না দিলে আমি বাপজানের বায়স্কোপ ছবিটি নির্মাণ করতে পারতাম না।
জাগো নিউজ : ২০১৫ সালের ১৮ ডিসেম্বর ‘বাপজানের বায়স্কোপ’ মুক্তি পেয়েছিল। মুক্তির কয়েকদিন পরেই হল থেকে এই ছবিটি নেমে গিয়েছিল। মনে পড়ে?
রিজু : হুম অবশ্যই মনে আছে। একটি কুচক্রী মহল নির্মাণশৈলী ও সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে হল মালিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে ছবিটি বন্ধ করতে বাধ্য করেছিল। এরপর বিকল্প ব্যবস্থায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ছবিটি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করি। এখন সেইসব কুচক্রী লোকদের উচিত ছবিটি হলে আবার প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা। একজন নির্মাতার সবচেয়ে বড় কষ্ট এটাই যে তার ছবিটি প্রদর্শিত হতে দেয়নি চলচ্চিত্রেরই কিছু মানুষ। টাঙ্গাইলসহ অনেক জায়গায় ছবিটি হল থেকে হঠাৎ নামিয়ে দেয়ায় মানববন্ধন করেছেন দর্শকরা। তবুও বুকিং এজেন্টরা কানে নেয়নি। তারা পুঁজিবাদের কথাই রেখেছে। কিন্তু অনেক দর্শক ছবিটি ইউটিউবে দেখে প্রশংসা করেছেন। আশা করছি এবার আরও বেশি দর্শক ছবিটির প্রতি আকৃষ্ট হবেন।
জাগো নিউজ : কলকাতার মিমি চক্রবর্তীকে নিয়ে নতুন একটি ছবি নির্মাণের কথা বলেছিলেন গেল বছর। সেটার আপডেট
রিজু : মিমিকে নিয়ে ছবি নির্মাণের জন্য তার সঙ্গে কলকাতায় গিয়ে কথা বলেছি। উনি খুব ব্যস্ত সময় পার করছেন। তাই শিডিউল মিলছে না। আপাতত মিমিকে আর নেয়া হচ্ছে না। এখন নতুন মুখ (নায়িকা) খুঁজছি। পেলেই শিগগির নতুন ছবির ব্যাপারে ঘোষণা দেব। আমি তো একজন নায়িকার জন্য বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে পারি না।
জাগো নিউজ : ভালো থাকুন। শেষবেলায় আবারও অভিনন্দন। আবারও নতুন কিছু দিয়ে চমকে দেবেন ঢাকাই চলচ্চিত্র শিল্পকে। সেই প্রত্যাশা রইল...
রিজু : আপনাকেও ধন্যবাদ। অনেক ভালোবাসা আমার দর্শকদের জন্য। চলচ্চিত্রের অনেক সমস্যা আছে। যারা এই শিল্পের নেতৃত্বে আছেন তারা সবাই মিলে এইসব সমস্যা দূর করে আমাদের পাশে দাঁড়াবেন সেই প্রত্যাশা সব নির্মাতা-কলাকুশলীর। হল দখলের নোংরা রাজনীতিও দূর হবে শিগগির, এটাও স্বপ্ন দেখি। আমার জন্য দোয়া করবেন সবাই।
এনই/এলএ/বিএ