মরেও শান্তি পেলেন না মা, গয়নার জন্য চিতায় উঠে গেলেন ছেলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৮:২৪ পিএম, ১৮ মে ২০২৫
মৃত মায়ের রুপার চুড়ির দাবিতে চিতায় উঠে পড়েন ছেলে/ ভারতের রাজস্থান রাজ্যের জয়পুরের ঘটনা/ এক্স থেকে সংগৃহীত ছবি

শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন মা। কিন্তু শোকপালন তো দূরের কথা, ছেলের নজর তখন মায়ের গয়নার ওপর! কয়েকটা রুপার চুড়ি নেওয়ার জন্য ছেলে এতই মরিয়া যে দুই ঘণ্টা ধরে পড়ে রইলো মায়ের মরদেহ। কারণ রুপার চুড়ির দাবিতে ছেলে তখন রীতিমতো মায়ের চিতার ওপর বসে পড়েছেন। চুড়ি না পেলে মায়ের দাহকাজ সম্পন্ন হবে না, সাফ জানিয়ে চিতায় বসে রইলেন ছেলে। এদিকে, সামাজিক মাধ্যমে ঘটনাটির ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়।

আজব এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে রাজস্থান রাজ্যের জয়পুরে। জানা গেছে, গত ৩ মে দুপুরে মৃত্যু হয় ছিতের রেগর নামক এক বৃদ্ধার। তার মোট সাত ছেলে। তাদের মধ্যে ৬ জন গ্রামের বাড়িতে মায়ের সঙ্গেই থাকতেন। তবে পঞ্চম সন্তান ওমপ্রকাশ গত তিন-চার বছর ধরে আলাদা থাকতেন গ্রামের বাইরে। মায়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে গ্রামে ফেরেন তিনি। আর সেখানেই বিপত্তি। মায়ের গয়নার ভাগ নিয়ে তুমুল অশান্তি বাধান তিনি। শেষকৃত্যের বদলে শুরু হয় তর্কাতর্কি।

রেওয়াজ অনুযায়ী, মৃতের রুপার চুড়ি ও অন্যান্য অলংকার পরিবারের প্রবীণরা বড় ছেলে গিরধারি লালকে দিয়ে দেন, যিনি জীবিত অবস্থায় মায়ের দেখভাল করতেন। কিন্তু ছোট ছেলে ওমপ্রকাশ এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন ও তাৎক্ষণিকভাবে চিতার ওপর শুয়ে পড়েন। তিনি দাবি জানান, যতক্ষণ না ওই গয়না তার হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে, ততক্ষণ মায়ের দাহকাজ হতে দেবেন না।

স্বজন ও গ্রামবাসীরা অনেক বুঝিয়েও তাকে চিতা থেকে উঠাতে পারেননি। এমনকি, একপর্যায়ে ওমপ্রকাশ হুমকি দেন, তার দাবি না মানা হলে তিনি মায়ের মরদেহের সঙ্গে নিজেকেও ওই আগুনে পুড়িয়ে ফেলবেন। পরে তাকে জোর করে চিতা থেকে নামিয়ে আনা হয়, কিন্তু পাশে বসে তিনি বিক্ষোভ চালিয়েই যান।

প্রায় দুই ঘণ্টা পর, মায়ের রুপার চুড়ি তার হাতে তুলে দিলে তিনি দাহকাজ চালিয়ে যেতে দেন। দুপুর নাগাদ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় বিকেলে।

গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ওমপ্রকাশের পরিবারের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ চলছিল। তিনি পরিবার থেকে আলাদা থাকেন ও প্রায়ই নিজেকে একঘরে বলে অনুভব করতেন।

এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে তীব্র আলোড়ন তুলেছে। অনেকেই এ ঘটনাকে দুঃখজনক ও পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয় হিসেবে দেখছেন। আবার এই ঘটনাকে মানবিকতার সীমা অতিক্রম করে সম্পত্তির লোভ কতটা গভীর হতে পারে, তারই এক নির্মম উদাহরণ হিসেবেও দেখছেন অনেকে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।