আসিয়ানের পরামর্শ

মিয়ানমারে নির্বাচন নয়, সব পক্ষের শান্তিপূর্ণ আলোচনা-ই মূল লক্ষ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০২ পিএম, ১১ জুলাই ২০২৫
শুক্রবার (১১ জুলাই) কুয়ালালামপুরের কনভেনশন সেন্টারে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক শেষে ফাঁকে প্রেস ব্রিফিংয়ে অংশ নেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ হাসান (ডান)/ ছবি: এএফপি

দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় দেশগুলোর জোট আসিয়ান মিয়ানমারে সামরিক সরকারের প্রস্তাবিত নির্বাচনকে অগ্রাধিকারের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। বরং দেশটিতে সহিংসতা বন্ধ করে শান্তিপূর্ণ আলোচনার পথ তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করেছে জোটের সদস্য রাষ্ট্রগুলো। শুক্রবার (১১ জুলাই) এমনটাই জানিয়েছেন মালয়েশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহামাদ হাসান।

আসিয়ানের চলতি চেয়ার মালয়েশিয়া ও দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচন পাঁচ দফা শান্তি পরিকল্পনার অংশ নয়। আমরা মিয়ানমারকে পরামর্শ দিয়েছি-নির্বাচন এখন অগ্রাধিকার নয়। অগ্রাধিকার হওয়া উচিত সহিংসতা বন্ধ করা, যাতে সব পক্ষ একসঙ্গে বসে আলোচনা করতে পারে।

২০২১ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চি’র নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এরপর আসিয়ানের মধ্যস্থতায় একটি পাঁচ দফা শান্তি চুক্তিতে সম্মত হয় জান্তা সরকার। তবে এই পরিকল্পনার বাস্তবায়ন একপ্রকার ব্যর্থ হয়েছে, কারণ সামরিক সরকার এখনো বিরোধীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বিবেচনা করে কোনো সংলাপে যেতে রাজি নয়।

পরিস্থিতির আরও অবনতি ঘটেছে, কারণ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো হয় নিষিদ্ধ, নয়তো নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়েছে।

মোহামাদ হাসান আরও বলেন, সব পক্ষ ছাড়া কোনো নির্বাচন অর্থহীন। তা কোনো সমস্যার সমাধান দেবে না, বরং পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলবে।

২০২২ সাল থেকে আসিয়ান তাদের বৈঠকে মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো বন্ধ রেখেছে, কারণ তারা শান্তিচুক্তি মানছে না। বর্তমানে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করেন শুধু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

মিয়ানমারে সামরিক জান্তা এখন একাধিক জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও গণবিক্ষোভ থেকে জন্ম নেওয়া প্রতিরোধ আন্দোলনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে। জাতিসংঘের তথ্যমতে, এ পর্যন্ত ৩৫ লাখেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, জান্তা সরকার ব্যাপক মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। যদিও সামরিক কর্তৃপক্ষ তা অস্বীকার করে একে ‘পশ্চিমা অপপ্রচার’ বলে উল্লেখ করছে।

মার্চ মাসে একটি ভূমিকম্পের পর সামরিক সরকার স্বল্পকালীন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছিল। তবে আসিয়ান চায় এই যুদ্ধবিরতি দীর্ঘস্থায়ী ও বিস্তৃত হোক। যদিও বিদ্রোহী গোষ্ঠী, অধিকার সংগঠন ও সংঘাত পর্যবেক্ষকদের দাবি, জান্তা সরকার নিজস্ব যুদ্ধবিরতির শর্তই মানছে না এবং আকাশ ও কামান হামলা অব্যাহত রেখেছে।

সূত্র: রয়টার্স

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।