ফোর্বস এশিয়ার ১০০ স্টার্টআপের তালিকায় বাংলাদেশের ‘পাঠাও’ ও ‘সম্ভব

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৫৬ পিএম, ৩১ আগস্ট ২০২৫

বাংলাদেশের স্টার্টআপ জগতের জন্য দারুণ সুখবর! আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সাময়িকী ফোর্বসের ‘ফোর্বস এশিয়া ১০০ টু ওয়াচ ২০২৫’ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের দুই জনপ্রিয় স্টার্টআপ— ‘পাঠাও’ ও ‘সম্ভব’।

এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের সম্ভাবনাময় ও উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলোকে নিয়ে ফোর্বসের এই বার্ষিক তালিকা প্রকাশিত হয়। এবারের তালিকায় ১৬টি দেশের উদ্যোগ স্থান পেয়েছে, যার মধ্যে বাংলাদেশের এই দুটি প্রতিষ্ঠান বিশেষভাবে নজর কাড়ছে।

পাঠাও: রাইড-শেয়ারিং থেকে ফিনটেক পাওয়ারহাউজ

২০১৫ সালে যাত্রা শুরু করা পাঠাও শুধু রাইড-শেয়ারিং নয়, এখন পুরোপুরি শহরভিত্তিক প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। ঢাকা থেকে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি বর্তমানে নেপালেও সেবা দিচ্ছে। এক অ্যাপের মাধ্যমে রাইড-শেয়ারিং, খাবার সরবরাহ, লজিস্টিকস, ই-কমার্স ও ফিনটেক সেবা দিচ্ছে পাঠাও।

এখন পর্যন্ত ৬০ লাখেরও বেশি ডাউনলোড এবং সাত কোটি ট্রিপ ও অর্ডার সম্পন্ন করেছে তারা। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ পাঠাও-এর মাধ্যমে আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন।

আরও পড়ুন>>

গত বছর পাঠাও ১ কোটি ২০ লাখ ডলার প্রি-সিরিজ বি তহবিল সংগ্রহ করেছে, ফলে মোট তহবিল দাঁড়িয়েছে পাঁচ কোটি ডলারেরও বেশি।

বর্তমানে পাঠাও তাদের ডিজিটাল ওয়ালেট ‘পাঠাও পে’ এবং ‘পে লেটার’ চালু করে ফিনটেক খাতে সেবা আরও বিস্তৃত করছে।

পাঠাওয়ের প্রধান নির্বাহী ফাহিম আহমেদ বলেন, ফোর্বস এশিয়ার ১০০ টু ওয়াচ তালিকায় জায়গা পাওয়া এবং পাঠাও-এর ১০ বছর পূর্তি- এ দুটোই প্রমাণ করে আমরা কতটা দূর এগিয়েছি, কীভাবে মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনছি এবং একটি আরও কানেক্টেড ও শক্তিশালী বাংলাদেশ গড়ার প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি কতটা দৃঢ়।

সম্ভব: কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত

প্রযুক্তি স্টার্টআপ হিসেবে ২০২২ সালের মে মাসে যাত্রা শুরু করে সম্ভব। রিফাদ হোসেন, নাকিব মুহাম্মদ ফাইয়াজ ও হাসিবুর রহমানের হাত ধরে এ স্টার্টআপের যাত্রা। ‘সম্ভব’দেশের ব্লু-কলার ও সিলভার-কলার কর্মীদের জন্য চাকরির সুযোগ সহজ করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

প্ল্যাটফর্মটির মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীরা ডিজিটাল প্রফেশনাল প্রোফাইল তৈরি, উপযুক্ত চাকরিতে সরাসরি আবেদন, অনলাইনে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং নিয়োগদাতাদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হতে পারেন। বিশেষভাবে নিম্নআয়ের নারীদের টেকসই জীবিকা তৈরিতে কাজ করছে সম্ভব।

২০২৩ সালে বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন থেকে তিন লাখ ডলারের অনুদান এবং ২০২৪ সালের মে মাসে সিঙ্গাপুরের কোকুন ক্যাপিটালের নেতৃত্বে ১০ লাখ ডলারের প্রি-সিড তহবিল সংগ্রহ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

সম্ভবের প্রধান নির্বাহী রিফাদ হোসেন বলেন, ‘সম্ভব’ মানে বাস্তবায়নযোগ্য। আমরা প্রমাণ করছি অন্তর্ভুক্তিমূলক, প্রযুক্তি-নির্ভর কর্মসংস্থান শুধু সম্ভব নয়, বরং লাভজনকও।

বাংলাদেশের স্টার্টআপের উত্থান

ফোর্বসের তালিকায় এই দুই প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের উদ্যোক্তা ইকোসিস্টেমের বিকাশ ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির প্রতিফলন। পাঠাও ও সম্ভব এরই মধ্যে ইউনিসেফ, সুইসকন্ট্যাক্ট ও রুটস অফ ইমপ্যাক্টসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে কাজ করছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি গ্রহণ বাড়ার ফলে বাংলাদেশের স্টার্টআপগুলো বৈশ্বিক মানচিত্রে আরও দৃশ্যমান হয়ে উঠছে।

কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।