অস্ট্রেলিয়া
বন্দুকধারীকে প্রতিহত করা সেই ‘হিরো’ সুস্থ হয়ে উঠছেন
অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস রাজ্যের বন্ডাই সমুদ্র সৈকতে ইহুদিদের একটি উৎসবে ভয়াবহ হামলার সময় নিজের জীবন বাজি রেখে এক হামলাকারীকে প্রতিহত করেন আহমেদ আল আহমেদ। আততায়ী পিছু হটতে বাধ্য হন ও পরে ঘটনাস্থল থেকে সরে যান। ঠিক তখনি অন্য বন্দুকধারীর হামলায় গুরুতর আহত হন আহমেদ। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন এবং অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হয়ে উঠছেন।
বন্দুকধারীদের হামলার সময় ৪৩ বছর বয়সী আহমেদ আল আহমেদ পার্ক করা গাড়ির পেছনে লুকিয়ে ছিলেন এবং বন্দুকধারীর কাছ থেকে রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে তাকে মাটিতে ফেলে দেন।
অস্ট্রেলিয়ান সংবাদমাধ্যম ৭নিউজের একটি ভিডিও প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, আহমেদের নিউ সাউথ ওয়েলসের সাদারল্যান্ড শহরে ফলের দোকান রয়েছে। তিনি বিবাহিত ও তার দুই মেয়ে রয়েছে। ৭নিউজে দেওয়া সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকারে এসব তথ্য জানান আহমেদের চাচাতো ভাই মুস্তাফা।
কাঁধে ও হাতে গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় এবং তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে তার পরিবার জানিয়েছে। তবে তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভালো।
ভয়াবহ ওই হামলায় কমপক্ষে ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছে। প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
আহমেদের চাচাতো ভাই মুস্তাফা বলেন, অস্ত্রোপচারের পর আহমেদের অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে বলে চিকিৎসকরা পরিবারকে জানিয়েছেন। মুস্তাফা বলেন, তিনি একজন নায়ক, তিনি শতভাগ নায়ক।
তিনি আরও বলেন, তিনি হাসপাতালে আছেন এবং আমরা ঠিক জানি না ভেতরে কী হচ্ছে... তবে আমরা আশা করি তিনি ভালো থাকবেন।
হামলার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আহমেদ আল আহমেদের ভূমিকা ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছে। অনেকেই বলছেন, একজন মুসলিম নাগরিকের এই সাহসিকতা ও মানবিকতা আবারও প্রমাণ করেছে যে সহিংসতার বিরুদ্ধে দাঁড়ানো ও নিরীহ মানুষের জীবন রক্ষা করা কোনো ধর্মের বিপরীত নয়, বরং মানবতারই প্রতিচ্ছবি।
এদিকে, আততায়ীর সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে তার হাত থেকে বন্দুক কেড়ে নেওয়া আহমেদকে ‘রিয়েল হিরো’ অর্থাৎ ‘প্রকৃত নায়ক’ বলে অভিহিত করেছেন অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার ক্রিস মিন্স।
ঘটনার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর ওই ব্যক্তির সাহসিকতার প্রশংসা করেন প্রিমিয়ার। তিনি বলেন, ওই ব্যক্তি একজন সত্যিকারের নায়ক। তার সাহসিকতার কারণেই আজ রাতে বহু মানুষ বেঁচে আছেন, এ নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই।
প্রিমিয়ার মিন্সের ভাষায়, হামলাকারীর হাত থেকে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাকে পিছু হটতে বাধ্য করার ঘটনায় ওই ব্যক্তির তাৎক্ষণিক সাহস ও দৃঢ়তা বহু প্রাণ রক্ষা করেছে।
অপরদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আহমেদকে ‘একজন অত্যন্ত সাহসী ব্যক্তি’ বলে অভিহিত করেছেন যিনি অনেকের জীবন বাঁচিয়েছেন।
টিটিএন