সম্পর্কোন্নয়নের দ্বারপ্রান্তে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া


প্রকাশিত: ০৫:২২ এএম, ০২ জানুয়ারি ২০১৫

দক্ষিণ কোরিয়ার সাথে স্থগিত শান্তি আলোচনা নতুন করে শুরু করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন। নববর্ষের প্রথম দিন জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া টেলিভিশন ভাষণে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সর্বোচ্চ পর্যায়ের এই আলোচনা অনুষ্ঠানের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, দু`দেশের সরকারের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক না করার কোনো কারণ নেই।

দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেয়ার তিন দিনের মাথায় উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে এ-প্রস্তাব করার হলো।

গেল বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে দুই কোরিয়ার বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া পরিবারগুলোর সম্মিলনের মধ্য দিয়ে উত্তর কোরিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক উন্নয়নের নতুন দ্বার উন্মোচন হয়। কিন্তু মার্চ মাসে. কারণে আবারও শান্তি আলোচনার সম্ভাবনা স্তিমিত হয়ে আসে। এরপর অক্টোবর মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় ইনচিওনে এশিয়ান গেমসের সমাপনী অনুষ্ঠানে উত্তর কোরিয়ার তিন শীর্ষস্থানীয় নেতার আকস্মিক যোগদান আবারও শান্তি আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে।

কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সনি পিকচার্সে সাইবার হামলার ঘটনা এবং সেই হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে উত্তর কোরিয়াকে দায়ী করার পাশাপাশি পরপর দুইবার উত্তর কোরিয়ার ইন্টারনেট ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়ার ঘটনায় পিয়ংইয়ং কোরিয়া পাশ্চাত্যের প্রতি কঠোর অবস্থানে যায়।

এরই মধ্যে নাটকীয়ভাবে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে স্থগিত শান্তি আলোচনা শুরুর প্রস্তাব দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। গেল সোমবার জাপানের শাসন থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে দু`দেশের মধ্যে নতুন করে আলোচনা শুরুর প্রস্তাব করেন দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ বিষয়ক মন্ত্রী।

দক্ষিণ কোরিয়ার একত্রীকরণ মন্ত্রী রিও কিল জায়ে বলেন, `পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে নতুন বছরের শুরুতেই শান্তি আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছি আমরা। বিশেষ কোন এজেন্ডা নেই আমাদের। দুই কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নে যা যা দরকার সব বিষয়কেই আমরা আলোচনায় প্রাধান্য দিতে চাই।`

এই প্রস্তাবের পর উত্তর কোরিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোন প্রতিক্রিয়া পাওয় না গেলেও নতুন বছরের শুরুতে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে স্থগিত শান্তি আলোচনা শুরুর পক্ষে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেন উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন।

উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন জানান, `যদি আলোচনার মাধ্যমে সম্পর্কোন্নয়নে দক্ষিণ কোরিয়া আন্তরিক হয় তাহলে আমরা স্থগিত আলোচনা শুরু করতে পারি। পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসতে আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আলোচনা কার্যকর করতে আমরা সব ধরনের চেষ্টা চালাবো।`

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আলাদা হয়ে যায় উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া। এরপর কয়েক দফা তাদের মধ্যে সংঘাত বাধে। দু পক্ষের মধ্যে কয়েকবার শান্তি আলোচনার উদ্যোগ নেয়া হলেও কোনটিই দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে নি।

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।