দুর্লভ খনিজ রপ্তানিতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করলো চীন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:০৪ পিএম, ০৯ অক্টোবর ২০২৫
চীনের একটি বন্দর। ছবি: এএফপি (ফাইল)

চীন উন্নত প্রযুক্তি তৈরির জন্য অত্যাবশ্যকীয় দুর্লভ খনিজ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদানের রপ্তানিতে নতুন করে কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে। এই পদক্ষেপটি এমন সময় এসেছে যখন দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য আলোচনায় রয়েছে।

বিশ্বের প্রায় ৯০ শতাংশ দুর্লভ খনিজ প্রক্রিয়াজাত করে চীন, যা সোলার প্যানেল থেকে শুরু করে স্মার্টফোন—সব ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়। বিশ্লেষকদের মতে, এ সিদ্ধান্তটি আসন্ন চীন-যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষ বৈঠকের আগে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের একটি কৌশলগত চাপ সৃষ্টির পদক্ষেপ।

চীন এরই মধ্যে এসব খনিজ প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তি ও বিদেশে অননুমোদিত সহযোগিতা নিষিদ্ধ করেছিল। তবে বৃহস্পতিবারের (৯ অক্টোবর) ঘোষণার মাধ্যমে সেই নিয়মগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনি কাঠামোয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

বিদেশি কোম্পানিগুলোকে এখন থেকে এমনকি অল্প পরিমাণ দুর্লভ খনিজ পণ্য রপ্তানির জন্যও চীনা সরকারের অনুমতি নিতে হবে এবং পণ্যের ব্যবহারের উদ্দেশ্য স্পষ্টভাবে জানাতে হবে।

চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আরও জানিয়েছে, একই ধরনের নিয়ন্ত্রণ লিথিয়াম ব্যাটারি ও গ্রাফাইট রপ্তানিতেও আরোপ করা হয়েছে—যা বৈশ্বিক প্রযুক্তি সরবরাহ শৃঙ্খলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং যার বড় অংশই চীনে উৎপাদিত।

বেইজিং বলেছে, এসব নিয়ম জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষার অংশ হিসেবে আরোপ করা হয়েছে। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এসব নিয়ন্ত্রণের মূল লক্ষ্য হলো বিদেশি প্রতিরক্ষা শিল্প ও মার্কিন চিপ নির্মাতারা, যারা চীনের ওপর দুর্লভ খনিজের জন্য নির্ভরশীল।

চীন এ বছরের এপ্রিল মাসে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনার মধ্যেই বেশ কয়েকটি দুর্লভ খনিজকে রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ তালিকায় যুক্ত করেছিল, যা বৈশ্বিক ঘাটতি তৈরি করেছিল।

নতুন ঘোষণার মূল দিকগুলো হলো অস্ত্র নির্মাতা ও চিপ শিল্পের নির্দিষ্ট কোম্পানিগুলোর কাছে রপ্তানি অনুমোদন প্রায় অসম্ভব। দুর্লভ খনিজ আহরণ, প্রক্রিয়াকরণ, চৌম্বক পদার্থ উৎপাদন ও পুনর্ব্যবহার সংক্রান্ত প্রযুক্তিও সরকারি অনুমতি ছাড়া রপ্তানি নিষিদ্ধ। উৎপাদন যন্ত্রপাতি জোড়া লাগানো, মেরামত, রক্ষণাবেক্ষণ বা আপগ্রেড করার প্রযুক্তিও অনুমতি ছাড়া রপ্তানি করা যাবে না।

তাছাড়া চীনা কোম্পানিগুলোও বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে পারবে না সরকারের অনুমতি ছাড়া।

এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্রে বড় প্রভাব পড়তে পারে, কারণ দেশটিতে দুর্লভ খনিজ আহরণের খাত থাকলেও প্রক্রিয়াজাতকরণ সুবিধা অত্যন্ত সীমিত।

সূত্র: বিবিসি

এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।