যে কারণে শান্তিতে নোবেল প্রত্যাখান করেছিলেন লি ডাক থো

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৩৫ পিএম, ১০ অক্টোবর ২০২৫
শান্তিতে নোবেল প্রত্যাখান করেছিলেন লি ডাক থো/ ছবি : দ্য নোবেল প্রাইজ

ডিনামাইটের উদ্ভাবক সুইডেনের বিজ্ঞানী আলফ্রেড নোবেলের নামে দেওয়া হয় বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক পুরষ্কার নোবেল। ১৯০১ সাল থেকে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার প্রদান করে আসছে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি, যার সদর দপ্তর নরওয়ের রাজধানী অসলোতে অবস্থিত।

প্রতিবছর শান্তিতে নোবেল দেওয়া কথা থাকলেও প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধসহ বিভিন্ন সময়ে যোগ্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান না থাকায় মোট ১৯ বার তা স্থগিত করা হয়েছিল। তবে শান্তিতে নোবেল পাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন আছেন যিনি এ পুরষ্কার পাওয়ার পরেও তা প্রত্যাখান করেছিলেন। শান্তিতে নোবেল প্রত্যাখান করা ওই ব্যাক্তির নাম লি ডাক থো। তিনি ১৯১১ সালে ভিয়েতনামের হান প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। ভিয়েতনামের স্বাধীনতায় তার অবদান অসামান্য। 

১ নভেম্বর ১৯৫৫ সাল থেকে শুরু হওয়া ভিয়েতনাম যুদ্ধ শেষ হয় ১৯৭৫ সালের ৩০ এপ্রিল। ১৯৫৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ ভিয়েতনামের সরকারকে সমর্থন দিয়ে যুদ্ধের আনুষ্ঠানিক সূচনা করে। প্রায় ২০ বছর ধরে চলা ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন বাহিনীর সৈন্য প্রত্যাহার ছিল গত শতাব্দীতে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় পরাজয়। এ যুদ্ধে দক্ষিন ভিয়েতনামে ভিয়েত কং গেরিলা বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন লি ডাক থো।

ভিয়েতনাম যুদ্ধ বন্ধে ১৯৭৩ সালের জানুয়ারি মাসে ফ্রান্সের প্যারিসে শুরু হয় আলোচনা। এর ফলে প্যারিস পিস অ্যাকর্ডের মাধ্যমে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা হয় যা বাস্তবায়ন হয় ১৯৭৫ সালে। এ শান্তি আলোচনায় উত্তর ভিয়েতনামের উপদেষ্টা ছিলেন লি ডাক থো। যুদ্ধ বন্ধে অবদান রাখার জন্য মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের সঙ্গে যৌথভাবে শান্তিতে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত হয়েছিলেন লি ডাক।

তবে লি ডাক থো এই পুরস্কার প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। ১৯৭৩ সালের সে শান্তি পুরষ্কার প্রত্যাখান করে লি ডাক থো বলেছিলেন,ভিয়েতনামে এখনো প্রকৃত শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি, তাই এই পুরস্কার আমি গ্রহণ করতে পারি না। যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ ভিয়েতনাম চুক্তির শর্ত মানেনি এবং যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি।

তাই তিনি নোবেল কমিটির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানালেও পুরস্কার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেন। ১৯৭৩ সালের সে প্যারিস চুক্তির পরেও ভিয়েতনাম যুদ্ধ আরও দুই বছর স্থায়ি হয়েছিল। তবে হেনরি কিসিঞ্জার পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন, যদিও তখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ব্যাপক সমালোচনা চলছিল।

এ পর্যন্ত শান্তিতে নোবেল পাওয়া কনিষ্ঠ ব্যক্তি পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই। পরমাণু অস্ত্র বিরোধী কর্মকাণ্ডের জন্য ৮৬ বছর বয়সে এ পুরষ্কার পেয়েছিলেন পোলিশ পরমানু বিজ্ঞানী জোসেফ রোটব্লাট। এছাড়া শান্তি সর্বোচ্চ তিন বার নোবেল পাওয়া প্রতিষ্ঠানের নাম ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস সোসাইটি।

সূত্র : আল জাজিরা
কে এম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।