২০৩০ সালের মধ্যে ইইউ সদস্যপদ পাবে যেসব দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:০৬ পিএম, ০৫ নভেম্বর ২০২৫
ফাইল ছবি

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ২০৩০ সালের মধ্যেই নতুন সদস্য রাষ্ট্রকে অন্তর্ভুক্ত করবে বলে জানিয়েছেন ইইউ-র পররাষ্ট্রনীতির প্রধান কায়া কালাস। সম্প্রতি প্রকাশিত ইইউ কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী মন্টিনিগ্রো ও আলবেনিয়া সংস্কার কার্যক্রমে সবচেয়ে এগিয়ে থাকায় এ দুই দেশ সদস্য পদ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সার্বিয়া ও জর্জিয়ায় গণতান্ত্রিক পন্থার অবনতি হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইইউ।

কালাস বলেছেন, ২০৩০ সালের মধ্যে নতুন দেশগুলো ইইউ–এর সদস্য হতে পারবে। এটি বাস্তবসম্মত লক্ষ্য। তার মতে, মন্টেনেগ্রো এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি অর্জন করেছে। তার পরেই রয়েছে আলবেনিয়া।

২০২২ সালে রাশিয়ার ইউক্রেন আক্রমণের পর থেকেই ইউরোপীয় সম্প্রসারণ প্রক্রিয়ায় নতুন গতি পেয়েছে। এস্তোনিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী কালাস জানান, ইউক্রেনের জন্য ইইউ সদস্যপদ একটি ‘বড় নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ হতে পারে। যুদ্ধাবস্থায় থেকেও এমন অগ্রগতির কারণে ইউক্রেনকেও এই সময়ের মধ্যে সদস্যপদ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও বলেছেন, ২০৩০ সালের আগেই তার দেশ ইইউ–এর সদস্য হতে চায়।

কায়া কালাস বলেন, রাশিয়ার ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার হামলা এবং বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক পরিবর্তন আমাদের জন্য ইইউ সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তাকে স্পষ্ট করেছে। আমরা যদি বৈশ্বিক পরিসরে শক্তিশালী প্লেয়ার হতে চাই, এটি একান্ত প্রয়োজন।

ইইউ কর্মকর্তারা মলদোভা রাষ্ট্রের বেশ প্রশংসা করেছেন। দেশটি রাশিয়ার অবৈধ অর্থায়ন, ভোট কেনা ও প্রচার অভিযানসহ নানা প্রভাব খাটানোর সত্তেও ইইউ–পথে সবচেয়ে দ্রুত অগ্রগতি অর্জন করেছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।

তবে তীব্র সমালোচনা হয়েছে জর্জিয়াকে নিয়ে। ইইউ সম্প্রসারণ কমিশনার মার্তা কোস বলেন, জর্জিয়া নামমাত্র প্রার্থী দেশ। গত বছর সরকারবিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ দমনে সহিংসতা চালানোয় দেশটির সদস্যপদ আলোচনা স্থগিত করা হয়। রাশিয়াপন্থী বিদেশি এজেন্ট আইন বিরোধী আন্দোলনের পর ৫০০ জনেরও বেশি মানুষকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে অনেকে নির্যাতনের শিকার হন বলে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট জানিয়েছে।

সার্বিয়ার ক্ষেত্রেও ইইউ নেতিবাচক মূল্যায়ন দিয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকসান্দার ভুচিচের সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সীমিতকরণ এবং গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের অভিযোগ রয়েছে।

বর্তমানে ইউক্রেন ও মলদোভার সদস্যপদ প্রক্রিয়ায় বড় বাধা হাঙ্গেরি। তাদের ভেটো ব্যবহারে দুই দেশের অগ্রগতি থমকে গেছে। ইইউ এখন এমন পথ খুঁজছে যাতে ২৭টি দেশের সর্বসম্মতি ছাড়াই আলোচনা চালিয়ে নেওয়া যায়।

অনেকে মনে করেন, নতুন সদস্য নেওয়ার আগে ইইউ–এর অভ্যন্তরীণ সংস্কার প্রয়োজন। বিশেষ করে পররাষ্ট্রনীতিতে ভেটো প্রথা তুলে দেওয়া উচিত। তবে কমিশনার কোস বলেন, মন্টেনেগ্রো ও আলবেনিয়া কে অন্তর্ভুক্ত করতে বড় কোনো আর্থিক বা প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজন নেই।

তবে ইউক্রেনের বিষয়ে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। যুদ্ধোত্তর দেশটির পুনর্গঠনের বিশাল অর্থ প্রয়োজন এবং বৃহৎ জনসংখ্যা (৪ কোটি ১৪ লাখ) থাকায় দেশটিকে অন্তর্ভুক্ত করা ইইউর জন্য একটি কঠিন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত হয়ে দাঁড়াবে বলে ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
কেএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।