কাজাখস্তানে চীনবিরোধী বিক্ষোভ করায় ১২ জনের কারাদণ্ড

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:৩৫ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২৫
২০১৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বেইজিংয়ের গ্রেট হল অব দ্য পিপলে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট কাসিম-জোমার্ত তোকায়েভ/ ফাইল ছবি: এএফপি

কাজাখস্তানে বিরল চীনবিরোধী বিক্ষোভের জেরে ১২ জনকে কারাদণ্ড ও ৬ জনকে জরিমানা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বরের) ওই প্রতিবাদী বিক্ষোভে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের প্রতিকৃতি পোড়ানোর ঘটনায় এসব শাস্তি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে কাজাখ কর্তৃপক্ষ।

বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) আয়োজিত ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া প্রতিবাদকারীরা অভিযোগ তোলেন, চীন একজন কাজাখ নাগরিককে ‘গুম’ করেছে ও কাজাখস্তানের জমি কিনেছে।

ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে পড়া একটি অযাচাইকৃত ভিডিওতে দেখা যায়, কাজাখস্তানের চীন সীমান্তবর্তী আলমাতি অঞ্চলের উইঘুর অধ্যুষিত এলাকায় প্রায় ৩০ জন মানুষ জড়ো হয়েছেন। তাদের হাতে তিনটি চীনা পতাকা ও প্রেসিডেন্ট শির প্রতিকৃতি ছিল।

ভিডিওতে এক বিক্ষোভকারীকে বলতে শোনা যায়, আমরা এখানে জড়ো হয়েছি, চীনের পতাকা ও প্রেসিডেন্টের প্রতিকৃতি পুড়িয়েছি। তিনি অভিযোগ করেন, চীন কোনো কারণ ছাড়াই অলিমনুর তুরগানবাই নামে এক কাজাখ নাগরিককে আটক করে রেখেছে ও বিদেশিদের কাছে কৃষিজমি বিক্রি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও কাজাখস্তানের জমি কিনছে।

স্থানীয় গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর দাবি, তুরগানবাইকে গত জুলাই থেকে আর দেখা যায়নি। তাকে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং প্রদেশে সীমান্ত কর্মকর্তারা আটক করেছিলেন।

চীনের জিনজিয়াং প্রদেশ দীর্ঘদিন ধরেই মুসলিম উইঘুর জনগোষ্ঠীর ওপর নিপীড়নের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে রয়েছে। প্রদেশটির সঙ্গে কাজাখস্তানের সীমান্ত রয়েছে।

কাজাখ পুলিশ জানায়, চীন সীমান্তের কাছাকাছি আলমাতি অঞ্চলে হওয়া ওই বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা রাষ্ট্রীয় পতাকা ও বিদেশি রাষ্ট্রের নেতার প্রতিকৃতি পোড়ানোসহ ‘অবৈধ কাজ’ করেছেন। এ ঘটনায় ১২ জনকে সর্বোচ্চ দুই সপ্তাহ পর্যন্ত স্বল্পমেয়াদি কারাদণ্ড ও আরও ছয়জনকে জরিমানা করা হয়েছে। পাশাপাশি, দীর্ঘমেয়াদি শাস্তির জন্য একটি ফৌজদারি মামলাও করা হয়েছে।

জাতিসংঘের এক কমিশন বলছে, জিনজিয়াংয়ের শিবিরগুলোতে কমপক্ষে ১০ লাখ উইঘুর ও অন্যান্য সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর লোকজনকে বন্দি করে রাখা রয়েছে, যাদের মধ্যে কাজাখ নাগরিকরাও আছেন।

তবে চীন এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, সন্ত্রাসবাদ দমন ও ‘জনগণকে শিক্ষিত’ করার লক্ষ্যে এসব ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

মধ্য এশিয়ায় এখন বড় বিনিয়োগকারী দেশ চীন; অবকাঠামো নির্মাণ থেকে শুরু করে প্রভাব বিস্তারের নানা উদ্যোগে অঞ্চলটিতে রাশিয়ার আধিপত্য প্রতিস্থাপন করছে বেইজিং। মুসলিম-প্রধান মধ্য এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে কাজাখস্তানও রয়েছে। জিনজিয়াংয়ের পরিস্থিতি উপেক্ষা করেই চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে।

সূত্র: এএফপি

এসএএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।