মার্কিন সামরিক ঘাঁটি স্থাপনসহ যে ৪ প্রশ্নে ইকুয়েডর জনগণের ‘না’ ভোট

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৯ এএম, ১৭ নভেম্বর ২০২৫
ইকুয়েডরের গণভোট শেষে ভোট গণনা/ ছবি : এএফপি

ইকুয়েডরে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি বিশেষত মার্কিন ঘাঁটির পুনঃস্থাপন নিয়ে অনুষ্ঠিত গণভোটে এগিয়ে রয়েছে ‘না’ ভোট। আংশিকভাবে এক-তৃতীয়াংশের বেশি ব্যালট গণনা শেষে দেখা গেছে, প্রস্তাবটির বিরুদ্ধে ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে। ফলে মাদক বিরোধী অভিযানের জন্য ইকুয়েডরের কোনো ঘাটি ব্যবহার করতে পারবে না মার্কিন সামরিক বাহিনী।

একইভাবে সংবিধান পুনর্লিখনের জন্য নতুন একটি অ্যাসেম্বলি গঠনের প্রশ্নে ৬১ শতাংশ ভোটার ‘না’ ভোট দিয়েছেন। রোববার(১৬ নভেম্বর) প্রকাশিত প্রাথমিক ফলাফলে মোট ভোটের ৩৬ শতাংশ গণনা শেষে এ তথ্য জানা গেছে।

রোববারের(১৬ নভেম্বর) গণভোটে আরও দুটি প্রশ্ন রাখা হয়েছিল। এগুলো হচ্ছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সরকারি তহবিল কমানো যাবে কি না? এবং জাতীয় পরিষদের সদস্য সংখ্যা ১৫১ থেকে কমিয়ে ৭৩ করা হবে কি না? প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে, এসব প্রস্তাবও ব্যর্থ হতে যাচ্ছে।

গণভোটে উভয় প্রস্তাব ব্যর্থ হলে তা প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়ার বিরোধী মতে জয় হবে। কারণ সংগঠিত অপরাধ দমনে বিদেশি সহযোগিতা প্রয়োজন এবং ইকুয়েডরে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি স্থাপন জরুরি বলে মত দিয়েছিলেন ড্যানিয়েল। পাশাপাশি সাবেক প্রেসিডেন্ট রাফায়েল কোরেয়ার সময় প্রণীত বর্তমান সংবিধান দেশের নতুন বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে নতুন সংবিধানের জন্য গণভোট আয়োজন করেছিলেন।

২০০৮ সালে ইকুয়েডর তাদের ভূখণ্ডে বিদেশি সামরিক ঘাঁটি নিষিদ্ধ করে। ফলে “না” ভোট জয়ী হলে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে অবস্থিত মান্তা এয়ারবেসে পুনরায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর কার্যক্রম শুরু করার পথ বন্ধ হয়ে যাবে। এ ঘাঁটিটি একসময় মাদক বিরোধী অভিযানের জন্য প্রধান কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করত যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।

ইকুয়েডরে চলমান নজিরবিহীন সহিংসতার মধ্যেই গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবেশী কলম্বিয়া ও পেরু থেকে উৎপাদিত কোকেন পাচারের গুরুত্বপূর্ণ ট্রানজিট পয়েন্টে পরিণত হওয়ায় দেশটিতে মাদক চক্রগুলোর প্রভাব দিন দিন বাড়ছে। বন্দরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সংঘাতে জড়িয়ে এসব গোষ্ঠী নেতা, সরকারি কর্মকর্তা, সাংবাদিকদের এবং সাধারণ মানুষের ওপর হামলা চালাচ্ছে।

এদিকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সন্দেহভাজন মাদকবাহী নৌকা লক্ষ্য করে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিতর্কিত নীতিকে সমর্থন করেছেন ইকুয়েডরের প্রেসিডেন্ট নোবোয়া। ক্যারিবীয় সাগরে মার্কিন বিমান হামলায় এখন পর্যন্ত ৭০ জনের বেশী নিহত হবার খবর পাওয়া গেছে।

২০২৩ সালের নভেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সেনা মোতায়েন, কারাগারে অভিযান, মাদকচক্রের ঘাঁটিতে হামলা এবং বারবার জরুরি অবস্থা জারির পথে হেঁটেছেন প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল নোবোয়া। ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে ইকুয়েডরে ৪,৬১৯টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।

সূত্র : এএফপি/ আল-জাজিরা 
কেএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।