আঞ্চলিক নির্বাচনে জোটের পরাজয়, চাপে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২১ পিএম, ৩০ নভেম্বর ২০২৫
আনোয়ার ইব্রাহিম/ ছবি: এএফপি (ফাইল)

তিন বছর ধরে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আনোয়ার ইব্রাহিম। এমন সময়েই দেশটির একটি আঞ্চলিক নির্বাচনে তার সমর্থিত মিত্রদের পরাজয়কে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের জন্য একটি বড় ধাক্কা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

সাবাহ রাজ্যে হওয়া এ নির্বাচনে ২০টি আসনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের পাকাতান হারাপান জোট জয় পেয়েছে মাত্র একটিতে, যেখানে এর আগের মেয়াদে বোর্নিও দ্বীপের এই রাজ্যে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তারা জয় পেয়েছিল ৭টি আসনে। সেদিক দিয়ে এবারের ফলাফল তাদের জন্য বিপর্যয়কর।

ইউনভিার্সিটি মালয়েশিয়ার সহযোগী অধ্যাপক এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষক লি কুওক তিয়াং বলেন, সাবাহ-র নির্বাচনের ফলাফল এটাই দেখিয়ে দিলো যে আনোয়ারের জোট বাজেভাবে হেরে গেছে।

দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে ২০২৮ সালের শুরুর দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তার আগে, শনিবারের সাবাহ রাজ্যের এই নির্বাচন ও এ ধরনের আসন্ন আরও বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক নির্বাচনকে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের প্রতি মালয়েশিয়ানদের সমর্থন যাচাইয়ের পরীক্ষা হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

সাবাহ-তে পাকাতান হারাপানের পরাজয় হলেও রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ রয়েছে গাবুঙ্গান রাকায়াকত সাবাহ-র হাতেই, যারা এই রাজ্যের দলগুলোরই একটি জোট এবং আনোয়ার ইবক্রাহিমের পাকাতান হারাপান ব্লকের মিত্র। সাবাহ-র স্বায়ত্তশাসন নিয়ে অনেকদিন ধরেই রাজ্যের মানুষের মধ্যে আন্দোলন দানা বাঁধছে। এ কারণে এবং প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিমের জোটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ থাকায় গাবুঙ্গান রাকায়াকত সাবাহ-র প্রতি তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্যের অনেকেই।

এদিকে, পুনরায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ায় দলটির নেতা হাজিজি নুরকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, রাজ্যের ভোটারদের স্পষ্ট এই বার্তাকে কেন্দ্রীয় সরকার সম্পূর্ণ সমর্থন করে এবং এর প্রতি সম্মান জানায়।

তিনি আরও বলেন, তারা (জনগণ) প্রায় সব দলের কাছ থেকেই অবহেলা এবং অপশাসন পাওয়ার পর এখন সত্যিকারের পরিবর্তন চাচ্ছে।

তবে প্রধানমন্ত্রী সাবাহ-তে তার জোট মিত্রদের পরাজয়ের ব্যাপারে মুখ খোলেননি। তার কার্যালয়ও এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে বলে রয়টার্স উল্লেখ করেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক লি কুওক তিয়াং বলেন, রাজ্যের স্বায়ত্তশাসনের দাবি নিয়ে ও স্থানীয় দলগুলোর ওপর আস্থা রাখা সাবাহ-র ভোটাররা মূলত প্রাধান্য দিয়েছেন পর্যাপ্ত পানি ও বিদ্যুতের প্রাপ্যতা, এবং সড়ক ও যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে। প্রধানমন্ত্রীর স্থানীয়দের মনস্তত্ত্ব বুঝতে হবে এবং রাজ্যের জনগণের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া পূর্বের প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নে কতটুকু অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তা মূল্যায়ন করতে হবে।

রাজ্যটির সঙ্গে ৫০ বছর আগে করা একটি প্রতিশ্রতি রক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকার ব্যর্থ হয়েছে- গত মাসে এ অভিযোগ এনে আনোয়ার ইব্রাহিমের মন্ত্রিসভা থেকে সাবাহ-র একজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেন। ওই চুক্তি অনুযায়ী, এই রাজ্য থেকে প্রাপ্ত রাজস্বের ৪০ শতাংশ বরাদ্দ থাকার কথা ছিল সাবাহ-র জন্য।

তবে প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম রাজ্যটির দাবি সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান করে তাদের সহায়তা চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছেন।

এএমএ/এমএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।