কুকুরের জন্য রাস্তায় নিরাপদবোধ করেন ৯১ শতাংশ ভারতীয়: জরিপ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৫৫ পিএম, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
কুকুরের জন্য রাস্তায় নিরাপদবোধ করেন ভারতীয়রা/ প্রতীকী ছবি: পেক্সেলস

ভারতের শহরাঞ্চলে পথকুকুর নিয়ে চলমান বিতর্কের মধ্যেই নতুন এক গবেষণায় উঠে এসেছে ভিন্নচিত্র। রাজধানী দিল্লিসহ ১০টি শহরের ১ হাজার ৬৩ জনকে নিয়ে করা জরিপে দেখা গেছে, ৯১ দশমিক ৪ শতাংশ মানুষ মনে করেন, তাদের এলাকায় থাকা পথকুকুর অপরাধ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে এবং সামগ্রিকভাবে এলাকা নিরাপদ রাখে।

দিল্লিতে পথকুকুর–সম্পর্কিত মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিলেন, পথকুকুর ও কামড়ের ঘটনার নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যানের অভাব রয়েছে। সেটি পূরণ করতেই নীতিভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এসিয়া সেন্টারের গবেষক মেঘনা বল ও আকিব কেয়ূম এই গবেষণা পরিচালনা করেন।

জলাতঙ্কে মৃত্যু কমেছে ৯০ শতাংশ

গবেষণা বলছে, ভারতে জলাতঙ্কে মানুষের মৃত্যু গত দুই দশকে নাটকীয়ভাবে কমেছে। ২০০৪ সালে যেখানে জলাতঙ্কে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৫৩৪, ২০২৪ সালে তা নেমে এসেছে মাত্র ৫৪তে। ২০২২ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে জলাতঙ্ক–সম্পর্কিত মৃত্যু রেকর্ড হয়েছে ১২৬টি।

আরও পড়ুন>>
৮ ছানাকে বস্তায় ভরে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা, শোকে অসুস্থ মা কুকুর
রাস্তায় ফেলে যাওয়া নবজাতককে সারারাত পাহারা দিলো একদল কুকুর
পথ ভুলে গেলে গন্তব্যে পৌঁছে দেয় কুকুর

কুকুর ‘বন্ধুসুলভ’

জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ৭৩ দশমিক ৫ শতাংশ বলেছেন, তাদের এলাকার পথকুকুর সাধারণত ‘বন্ধুসুলভ’। আরও ১৫ শতাংশ মনে করেন, কুকুরগুলো ‘লাজুক’। মাত্র ১০ দশমিক ৮ শতাংশ মানুষ পথকুকুরকে ‘আক্রমণাত্মক’ বলেছেন।

গবেষণা বলছে, ৭৪ শতাংশ পথকুকুর খাদ্যদাতারা জানান, কুকুর খাওয়ানো তাদের ধর্মীয় চর্চার একটি অংশ।
মহাভারতের মতো মহাকাব্য ও হিন্দু পুরাণে কুকুরের উপস্থিতি ও দেবতার সঙ্গে সংযোগের বিষয়গুলো এর সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মন্তব্য গবেষকদের।

নিরাপত্তা ও সহাবস্থান

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানুষের আচরণই পথকুকুরের আচরণ নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখে। মানুষ নিয়মিত খাবার দিলে বা সদাচরণ করলে কুকুররা বেশি শান্ত স্বভাবের হয়।

জরিপে অংশ নেওয়া ৯৬ শতাংশ মানুষ বলেছেন, পথকুকুর থাকায় তারা নিজেদের এলাকায় ‘খুবই নিরাপদ’ অনুভব করেন। ৫২ শতাংশ মনে করেন, পথকুকুর নারীদের ও শিশুদের সুরক্ষা দেয়। প্রায় ৫২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, কুকুরেরা বানর ও ইঁদুর দূরে রাখতে সাহায্য করে।

দোষ ব্যবস্থাপনা ঘাটতির

গবেষণায় বলা হয়, কুকুরের আক্রমণ, কামড় বা জনসংখ্যা–অসামঞ্জস্য, এসব সমস্যা পথকুকুরের উপস্থিতির কারণে নয়; বরং দুর্বল পৌর পরিকল্পনা, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ঘাটতি এবং প্রাণী জন্মনিয়ন্ত্রণ (এবিসি) বাস্তবায়নে ত্রুটির কারণে তৈরি হয়।

কী করা যায়?

গবেষণা কিছু নীতিগত সুপারিশও দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে-

  • কামড়ের ঘটনায় রিপোর্ট ফরমে আলাদা করে উল্লেখ করা—কুকুরটি পোষা নাকি পথকুকুর।
  • পথকুকুর খাদ্যদাতাদের হয়রানি বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা।
  • যথাযথ নির্বীজন ও টিকাদান কার্যক্রম জোরদার।
  • কমিউনিটি ফিডারদের সঙ্গে পৌর সংস্থার সমন্বয় বাড়ানো।
  • এবিসি নিয়মের বাস্তবায়নে ‘লোকযুক্ত’ হিসেবে কমিউনিটি সদস্যদের যুক্ত করা।

সূত্র: দ্য প্রিন্ট
কেএএ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।