দক্ষিণ কোরিয়ায় টাক পড়া ‘বেঁচে থাকার প্রশ্ন’, স্বাস্থ্য বিমার নির্দেশ প্রেসিডেন্টের
সরকারি স্বাস্থ্য বিমার আওতায় চুল পড়ার চিকিৎসা অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে-মিয়ং। তার মতে, তরুণদের কাছে টাক পড়া এখন আর নিছক সৌন্দর্যগত বিষয় নয় বরং এটি একটি ‘বেঁচে থাকার প্রশ্ন’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
গত সপ্তাহে এ প্রস্তাবটি উত্থাপন করা হলেও এরই মধ্যে চিকিৎসক সমাজ ও রক্ষণশীল মহল থেকে এর তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, বর্তমানে যেসব সীমিত ধরনের চুল পড়ার চিকিৎসা বিমার আওতায় রয়েছে তার বাইরে সাধারণ হেয়ার লস চিকিৎসাও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
২০২৪ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার হেয়ার লস চিকিৎসা বাজারের মূল্য প্রায় ১৮৮ বিলিয়ন উন (প্রায় ৯৫ মিলিয়ন পাউন্ড) বলে ধারণা করা হয়। শিল্প সংশ্লিষ্টদের দাবি, দেশটির ৫ কোটি ১০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ১ কোটি মানুষ চুল পড়ার সমস্যায় ভুগছেন।
এই প্রস্তাব দক্ষিণ কোরিয়ার সমাজে শারীরিক সৌন্দর্য নিয়ে প্রবল চাপের বাস্তবতা আবার সামনে এনেছে। ২০২৪ সালে তরুণদের ওপর চালানো এক জরিপে দেখা যায়, ৯৮ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন সুন্দর মানুষ সামাজিক সুবিধা পায়।
২০২২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় প্রথম এই প্রস্তাব দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট লি। তখন এটিকে জনতুষ্টিমূলক রাজনীতি বলে সমালোচনা করা হয় এবং পরবর্তী তার নির্বাচনী ইশতেহারে বিষয়টি বাদ দেওয়া হয়।
প্রেসিডেন্ট লি বলেন, অনেক তরুণ আছেন যারা নিয়মিত বিমার প্রিমিয়াম পরিশোধ করলেও কোনো সুবিধা পান না—এটি তাদের কাছে অন্যায্য মনে হতে পারে।
এদিকে প্রস্তাবের সময়টি সংবেদনশীল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। কারণ দক্ষিণ কোরিয়ার স্বাস্থ্য বিমা ব্যবস্থা আর্থিক সংকটের মুখে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৬ সালে এই খাতে ৪.১ ট্রিলিয়ন উন ঘাটতি দেখা দিতে পারে।
কোরিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বলেছে, চুল পড়ার চিকিৎসার পরিবর্তে ক্যানসার ও গুরুতর রোগের চিকিৎসায় বিমার অর্থ ব্যয় করাই স্বাস্থ্য বিমার মূল নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান
কেএম