সিঙ্গাপুরে করোনা আক্রান্ত আরও তিন, ৪ জন ‘আশঙ্কাজনক’
সিঙ্গাপুরে আরও তিনজনের শরীরে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৪ জন। এদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে দু’জন গ্রেস অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চ এবং একজন লাইফ চার্চ ও মিশনের সঙ্গে সম্পর্কিত। তৃতীয়জনের সাম্প্রতিক চীনভ্রমণ বা আগের আক্রান্তদের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। তাকে প্রথমে ডেঙ্গু-আক্রান্ত হিসেবে হাসপাতালের সাধারণ ওয়ার্ডে রাখা হয়েছিল। পরে করোনাভাইরাস শনাক্তের পর ওই ওয়ার্ডের বাকিদেরও আলাদা রুমে পাঠানো হয়।
জানা যায়, ৫৭ বছর বয়সী ওই নারী গত বৃহস্পতিবার এন টেং ফং জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিতে গিয়েছিলেন। গত শনিবার তাকে ডেঙ্গু রোগী হিসেবে সাধারণ ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। কিন্তু গত মঙ্গলবার তার শারীরিক পরীক্ষায় করনোভাইরাস ধরা পড়ে। এর পরপরই তাকে আইসোলেশনে রাখা হয়। এছাড়া যাদের সঙ্গে তিনি একই ওয়ার্ডে ছিলেন, তাদের সবাইকে আলাদা একটি রুমে রাখা হয়েছে। তাদের শারীরিক পরীক্ষার ফলাফল এখনও পাওয়া যায়নি।
দ্বিতীয় ঘটনা গ্রেস অ্যাসেম্বলি অব গড চার্চ সম্পর্কিত। সিঙ্গাপুরে সবচেয়ে বেশি (২২ জন) ভাইরাস ছড়িয়েছে এই জায়গা থেকেই। বুধবার সেখানকার ৩৫ বছর বয়সী এক নারী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত হয়েছে সিঙ্গাপুর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। তিনি দেশটির ন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনফেকশাস ডিজিজেসে (এনসিআইডি) চিকিৎসাধীন।
ভাইরাস আক্রান্ত তৃতীয় ব্যক্তির লাইফ চার্চ ও মিশনের সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে। ৫৪ বছর বয়সী সিঙ্গাপুরের এ নাগরিক সম্প্রতি চীনভ্রমণ না করলেও মালয়েশিয়ায় তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। বুধবার সকালে তার শরীরে করোনাভাইরাস রয়েছে নিশ্চিত হয়। তাকেও এনসিআইডিতে আইসোলেশনে রাখা হয়েছে।
এদিন সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন আরও পাঁচ কোভিড-১৯ রোগী। এরমধ্যে রয়েছেন সিঙ্গাপুরে করোনা আক্রান্ত প্রথম রোগীও। গত ২২ জানুয়ারি হাসপাতালে ভর্তি হন ৬৬ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি। তার ছেলেও ভাইরাস আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়ে উঠছেন। শিগগিরই তিনিও হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পাবেন।
সিঙ্গাপুরে এখন পর্যন্ত মোট ৩৪ জন করোনা আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেছেন। হাসপাতালে ভর্তি অন্যদের মধ্যে বেশিরভাগেরই অবস্থা স্থিতিশীল। তবে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এদের মধ্যে একজন বাংলাদেশি রয়েছেন, তাকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। দেশটিতে আরও চার বাংলাদেশি করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন।
সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বুধবার আরও ২ হাজার ৫৯৩ জনকে চিহ্নিত করেছে, যাদের সঙ্গে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের যোগসূত্র রয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত প্রায় ১ হাজার ১৭২ জন কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন এবং এর সময়সীমা পূর্ণ করেছেন অন্তত ১ হাজার ৪২১ জন।
গতকাল চীনে আরও ১০৮ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এ নিয়ে দেশটিতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২ হাজার ১১২ জনে। এছাড়া, চীনের মূল ভূখণ্ডের বাইরে মারা গেছেন অন্তত আটজন। এর মধ্যে হংকং ও ইরানে দু’জন করে এবং তাইওয়ান, জাপান, ফ্রান্স ও ফিলিপাইনে একজন করে মারা গেছেন।
এদিন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪৯ জন। এর মধ্যে ভাইরাসের উৎসস্থল চীনের হুবেই প্রদেশেই আক্রান্ত হয়েছেন ৬২ হাজার ৩১ জন। সারাবিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭৬ হাজার ২৬২ জন।
সূত্র: দ্য স্ট্রেইট টাইমস, রয়টার্স
কেএএ/এমএস