করোনায় বৈশ্বিক উন্নয়ন পিছিয়েছে দুই দশক : বিল গেটস
করোনাভাইরাস মহামারির বিস্তার বৈশ্বিক উন্নয়নকে দুই দশকের বেশি পেছনে ঠেলে দিয়েছে। বিল গেটস ও মেলিন্ডা গেটসের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ ব্যাপক বৈষম্য, ব্যাধি এবং দারিদ্রের মুখোমুখি হয়েছেন। এছাড়া জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বৈশ্বিক এই মহামারি।
বিবিসিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বিল গেটস বলেছেন, আগামী বছরের শুরুর দিকে একটি কার্যকর করোনা ভ্যাকসিন প্রস্তুত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে যেকোনও ভ্যাকসিন আসুক না কেন, তা গরীব দেশগুলোতেও সহজলভ্য করার ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
গেটস ফাউন্ডেশন বলছে, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে চরম দারিদ্রতা বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ৭ শতাংশ। এছাড়া স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অন্যান্য ভ্যাকসিন কর্মসূচি ১৯৯০ সালের পর সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমে এসেছে।
গবেষণা প্রতিবেদনের ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য ও উন্নয়নের শীর্ষস্থানীয় দাতা ও গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ারম্যান বিল গেটস বলেন, এটি বিশাল এক ধাক্কা। বিশ্বজুড়ে জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অগ্রগতির ব্যাপারে ফাউন্ডেশনের গোলকিপারস প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় প্রতিটি সূচকে অবনমন ঘটেছে।
এতে বলা হয়েছে, করোনা মহামারি নারী, জাতিগত ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায় এবং চরম দারিদ্র্য জনগোষ্ঠীর ওপর অস্বাভাবিক প্রভাব ফেলেছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গেটস ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক সুজম্যান বলেছেন, আমরা টানা ২০ বছর ধরে চরম দারিদ্র্যের হারে অবনতির পর এখন আরেকটি বিপর্যয় দেখছি।
তিনি বলেন, প্রায় ৪ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে পড়েছে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর প্রতি সপ্তাহ আগের চেয়ে প্রায় এক মিলিয়নের বেশি মানুষ চরম দারিদ্র্যের শিকার হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পূর্বাভাসের বরাত দিয়ে গেটস ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কা শামলে ওঠার জন্য বিশ্ব অর্থনীতি বাঁচাতে বিশ্বেজুড়ে ১৮ ট্রিলিয়ন ডলারের উদ্দীপনা প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়েছে। এ সত্ত্বেও বিশ্ব অর্থনীতি আগামী বছরের শেষ নাগাদ ১২ ট্রিলিয়ন ডলার হারাবে; যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধির বৃহত্তম ক্ষতি।
সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স।
এসআইএস/পিআর