এশিয়ায় করোনার নতুন হটস্পট ইন্দোনেশিয়া?
ভারতের চেয়েও দৈনিক সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে ইন্দোনেশিয়ায়। ফলে এশিয়ায় ইন্দোনেশিয়া এখন করোনার নতুন হটস্পট হয়ে উঠছে বলে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটিতে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আশঙ্কাজনক হারে বাড়তে শুরু করেছে বলে ব্লুমবার্গের এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
টানা দু'দিন ধরে ইন্দোনেশিয়ায় দৈনিক সংক্রমণ ৪০ হাজারের বেশি। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৭ হাজার ৮৯৯ জন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এখন পর্যন্ত একদিনে এই সংখ্যা সর্বোচ্চ। এক মাস আগেও দেশটিতে দৈনিক সংক্রমণ ছিল ১০ হাজারের কম। কর্মকর্তা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, সবচেয়ে সংক্রামক ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট দেশটির প্রধান জাভা দ্বীপের বাইরে ছড়িয়ে পড়ছে। ফলে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ছে এবং অক্সিজেন সঙ্কট দেখা দিচ্ছে।
গত সাতদিন ধরে গড়ে প্রতিদিন ইন্দোনেশিয়ায় ৯০৭ জনের মৃত্যু হচ্ছে। একমাস আগেও এই সংখ্যা ছিল মাত্র ১৮১। গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই হাসপাতালে রোগীর চাপ, অক্সিজেনের সঙ্কটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ইন্দোনেশিয়া। লকডাউন জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না। কোনভাবেই সংক্রমণ কমার কোনও লক্ষণ নেই। সংক্রমণ এবং মৃত্যু পাল্লা দিয়ে বাড়ছেই।
বেশ কিছু শহরে অক্সিজেন সঙ্কট চরম আকার ধারণ করেছে। ফলে অক্সিজেন সরবরাহের ক্ষেত্রে অক্সিজেন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগে হাসপাতালগুলোকে প্রাধান্য দেয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। বিভিন্ন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের সামর্থ্যের মধ্যে যা আছে তা নিয়েই তারা কাজ চালানোর চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
ব্লুমবার্গের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ইন্দোনেশিয়ায় মোট জনসংখ্যার মাত্র ১০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। অপরদিকে ভারতে ১৪ শতাংশ মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছে। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের ৪৬ শতাংশ মানুষ এবং যুক্তরাষ্ট্র ৫২ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে সক্ষম হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ায় সংক্রমণের হার ২৭ শতাংশে পৌঁছেছে। অপরদিকে ভারতে সংক্রমণের হার বর্তমানে দুই শতাংশ। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইন্দোনেশিয়ায় লকডাউনের সময়সীমাও আরও বাড়ানো হয়েছে। আগামী ২০ জুলাই পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকবে বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে।
টিটিএন/এএসএম