হু হু করে সংক্রমণ বাড়ছে ত্রিপুরায়
ত্রিপুরা প্রতিনিধি
নতুন বছরের প্রথম দিন থেকেই ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। প্রথম সপ্তাহে সংক্রমনের মাত্রা দুই অঙ্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও সপ্তাহের শেষদিন থেকে ক্রমেই তা তিন অঙ্কে পৌঁছেছে।
গত সোমবারও (১০ জানুয়ারি) যেখানে ওই রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ১৭৬ জন, সেখানে মাত্র ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ায় ৫৭৯ জনে। বুধবার (১২ জানুয়ারি) এই সংখ্যা আরও বেড়ে দাঁড়ায় ৭৮৩ জনে। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) নতুন আক্রান্তের সংখ্যা আরও ৯১৬ জন।
ভারতের স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েকদিনে সংক্রমণের হার আগের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গেছে। সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী অর্থাৎ বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) পজিটিভ কেসের হার দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। তবে গত কয়েক দিনের তুলনায় এদিন আরও বেশি সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়।
এদিন সর্বমোট পরীক্ষা করানো হয়েছে ১০,০৬৮ জনকে। এরমধ্যে আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা করানো হয় ৭৫১ জনকে এবং এন্টিজেন পদ্ধতিতে পরীক্ষা করানো হয় ৯,৩১৭ জনকে। আরটিপিসিআর পদ্ধতিতে পরীক্ষা করিয়ে পজেটিভ হয়েছেন ৬৮ জন এবং অ্যান্টিজেন পদ্ধতিতে পরীক্ষা করিয়ে পজিটিভ হয়েছেন ৮৪৮ জন। অর্থাৎ পজেটিভ হয়েছেন ৯১৬ জন। এছাড়াও এদিন চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও মোট ২,৮৪৪ জন।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে যে রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে তা অনুযায়ী, নতুন আক্রান্ত ৯১৬ জনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৫৯ জন আক্রান্ত হয়েছেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায়। এছাড়া সিপাহীজলা জেলায় নতুন করে ৫৬ জন, খোয়াই জেলায় ৩৮ জন, গোমতী জেলায় ৫৫ জন, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলায় ৪৯ জন, ধলাই ত্রিপুরা জেলায় ৬৬ জন, ঊনকোটি জেলায় ৪৯ জন এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলায় ৪৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করায় ইতিমধ্যেই চিন্তিত রাজ্য প্রশাসন। বিশেষ করে সাধারণ অংশের জনগণের মধ্যে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া হলেও তেমনভাবে কাউকে সচেতন হতে দেখা যাচ্ছে না। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে বাধ্য হয়ে তাই গত কয়েকদিন ধরেই বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিধানে বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাসকে তোয়াক্কা না করে অনেক ক্ষেত্রেই এই বিধিনিষেধ মানতে চাইছে না নির্দিষ্ট একটি অংশের লোকজন। রাজধানী আগরতলার বিভিন্ন প্রান্তে এক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নজরদারি শুরু হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসনের পক্ষ থেকে যারা মাস্ক ছাড়াই বাড়ি থেকে বের হচ্ছেন তাদের বুঝিয়ে মাস্ক পড়ানোর ব্যবস্থাও করা হচ্ছে। আবার অনেক জায়গায় কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতেও দেখা গেছে। এমনকি প্রশাসনের পক্ষ থেকে জরিমানাও আদায় করা হয়েছে।
টিটিএন/এএসএম