২০ বছর পর মেয়ে সন্তান, ‘রাজকন্যা’ সাজিয়ে বাড়ি আনলো পরিবার
বাড়িতে নতুন অতিধি আসছে শুনলে সবারই আনন্দ হয়, মন ভালো হয়ে যায় মুহূর্তেই। তবে কোনো কোনো পরিবারে আজও সন্তান ছেলে নাকি মেয়ে হবে তা নিয়ে বিস্তর আলোচনা-গবেষণা হয়। অনেক সময় পুত্রসন্তান পাওয়ার জন্য চাপে ফেলা হয় হবু মাকে। তাদের কাছে কন্যাসন্তান মানেই বোঝা! সেসব লিঙ্গবৈষম্যের ধ্বজাধারীদের মুখে যেন সজোরে চপেটাঘাত করলো আহমেদবাদের আসরানি পরিবার। সদ্যজাত কন্যাসন্তানকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি আনতে তাদের রাজকীয় আয়োজন দেখে অবাক হয়েছেন অনেকে।
ঘটনা ঠিক কী? জানা যায়, গত ২৯ জানুয়ারি ভারতের আহমেদাবাদের হাতকেশ্বরে নরেন্দ্র আসরানির বাড়িতে আনন্দের জোয়ার লাগে। কারণ, বহু বছর পর ওইদিন পরিবারে কন্যাসন্তান এসেছে। বাড়ির লোকদের মধ্যে অনেকেই বাবা-মা হয়েছেন। তবে কারও ঘরে গত ২০ বছরে একটিও কন্যাসন্তান হয়নি।
দুই দশক পর পরিবারে কন্যাসন্তান জন্ম নেওয়ায় আসরানি পরিবারে খুশির সীমা নেই। হাসপাতাল থেকে সুখবর পাওয়ার পর থেকে আনন্দে রীতিমতো নাচতে শুরু করেন শিশুটির দাদু। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে পরিচিত বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন সবার কাছে ফোন করেন। নাতনিকে কীভাবে স্বাগত জানানো যায় তা নিয়ে পরিকল্পনা করতে থাকেন।
যেমন ভাবনা, তেমন কাজ। নাতনিকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি আনার দিন এলাহি আয়োজন করেন বৃদ্ধ। হাসপাতালের সামনে ঘোড়ার গাড়ি নিয়ে হাজির হন। তাতে ‘ঘরের লক্ষ্মীকে’ কোলে নিয়ে ওঠেন মা। পাশে বসেন নবজাতকের বাবা। ছিল ব্যান্ড পার্টির ব্যবস্থাও। গানের সুরে নাচতে নাচতে বাড়ি ফেরেন পরিবারের সদস্যরা। তাদের ধুমধাম আয়োজন দেখতে রাস্তায় ভিড় জমে যায়।
শিশুটির বাবা বলেছেন, বর্তমানে লিঙ্গবৈষম্য অনেকটা দূর হয়েছে ঠিক। তবে এখনো কন্যাসন্তান জন্ম দিয়ে বহু মাকে নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমরা তার বিরুদ্ধে বার্তা দিতে চেয়েছিলাম। কন্যাসন্তান পরিবারের বোঝা নয়, তাই বোঝাতে চেয়েছি।
তিনি বলেন, বাবা হওয়া আনন্দের। কিন্তু মেয়ের বাবা হয়ে আমার সেই আনন্দ দ্বিগুণ বেড়ে গেছে।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
কেএএ/জিকেএস