এবার পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত প্রধানমন্ত্রী পেতে চলেছে স্কটল্যান্ড

দীর্ঘ পাঁচ সপ্তাহের লড়াই শেষে স্কটল্যান্ডের ক্ষমতাসীন স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির (এসএনপি) প্রধান নেতা নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত হামজা ইউসেফ। সোমবার (২৭ মার্চ) এসএনপি প্রধানের পদ নিশ্চিত করেন ইউসেফ। এর মাধ্যমে তিনি নিকোলা স্টার্জেনের স্থলাভিষিক্ত হতে যাচ্ছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যশ বিবিসি বলছে, ৩৭ বছর এশীয় বংশোদ্ভুত নেতা এখন স্কটল্যান্ডের ফার্স্ট মিনিস্টার (প্রধানমন্ত্রী) হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। মঙ্গলবার (২৮ মার্চ) পার্লামেন্টে অনুমোদন পেলেই বুধবার শপথ নেবেন ইউসেফ ও নিকোলা স্টার্জেনের উত্তরসূরি হিসেবে এসএনপির নেতৃত্ব দেবেন।
আরও পড়ুন>> লন্ডনে ভারতীয় হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ
এডিনবার্গে দেওয়া আবেগঘন বিজয়ী ভাষণে তিনি বলেন, পাঞ্জাব থেকে স্কটল্যান্ডের পার্লামেন্ট, আমাদের প্রজন্মের জন্য এটি একটি অভিযাত্রা বটে। স্কটল্যান্ডের জন্য তাঁর প্রবল আবেগ রয়েছে জানিয়ে স্বাধীনতাপন্থী দলটির নতুন এ নেতা বলেন, স্কটল্যান্ডের জনগণের স্বাধীনতা এখন আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রয়োজন।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বলে, আট বছর পার্টির নেতা ও স্কটল্যান্ডের আধা-স্বায়ত্তশাসিত সরকারের দায়িত্ব পালনের পর গত মাসে অপ্রত্যাশিতভাবে পদত্যাগ করেন স্টারজেন। এর পরপরই ক্ষমতাসীন এসএনপি‘র মধ্যে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে ব্যাপক বিভক্তি সৃষ্টি হয়। এ অস্থিরতার মধ্যেই দলটির নতুন নেতার বেছে নিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন>> রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে কী ক্ষতি হলো যুক্তরাজ্যের?
এ নির্বাচনে ইউসেফেই ফেভারিট ছিলেন। আর শেষ পর্যন্ত স্টার্জেনের অনুগত এ নেতাই জয়ী হন। কেট ফোর্বস ও অ্যাশ রিগ্যানকে পরাজিত করে ফার্স্ট মিনিস্টারের জায়গা নিশ্চিত করেন ইউসেফ। জানা যায়, তিনিই একমাত্র নেতা যিনি, স্টার্জনের বিতর্কিত লিঙ্গ স্বীকৃতি সংস্কারের বিষয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের ব্লককে আদালতে চ্যালেঞ্জ করার কথা বলেছিলেন।
এদিকে, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা ইউসেফের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার অভিযোগ তুলেছেন। সম্প্রতি করোনা মহামারি চলাকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্বে ছিলেন তিনি। অনেকে বলছে, একমাত্র স্টার্জেনের অনুগত হওয়াতেই ফার্স্ট মিনিস্টার হিসেবে নিজের জায়গা পাকা করতে পেরেছেন ইউসেফ।
আরও পড়ুন>> যুক্তরাজ্য আর ব্রিটেন কিন্তু এক নয়
জানা যায়, স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতা প্রশ্নে ২০১৪ সালের গণভোটে পক্ষে ৪৫ শতাংশ ও বিপক্ষে ৫৫ শতাংশ ভোট পড়েছিল। দুই বছর পর ব্রিটেনের ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ভোটে অধিকাংশ স্কট বিটেনকে ইইউতে থেকে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। অবশ্য চলতি মাসের এক জনমত জরিপে দেখা যায়, স্বাধীনতার প্রতি স্কটিশ জনগণের সমর্থন কমে ৩৯ শতাংশে নেমে এসেছে। এর আগে ২০২০ সালে সর্বোচ্চ ৫৮ শতাংশ মানুষ নিজেদের স্বাধীনতার পক্ষে ছিল।
এর আগে ২০২২ সালে অক্টোবরে প্রায় একইভাবে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ভারতীয় বংশোদ্ভূত ঋষি সুনাক। ওই বছরের সেপ্টেম্বরে নেতৃত্বের দৌড়ে লিজ ট্রাসের কাছে হেরে গিয়েছিলেন ঋষি সুনাক। কিন্তু মাত্র দেড় মাস ক্ষমতায় থাকার পর পদত্যাগ করতে বাধ্য হন লিজ ট্রাস।
আরও পড়ুন>> বদলে যাবে ব্রিটেনের মুদ্রা-পাসপোর্ট
এর পরপরই আবারও নেতৃত্বের জন্য প্রার্থিতা ঘোষণা করেন সুনাক। শেষ পর্যন্ত বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় কনজারভেটিভ পার্টির নেতা নির্বাচিত হয়ে যান তিনি।
সূত্র: বিবিসি, আল জাজিরা
এসএএইচ/জিকেএস