জেড আই খান পান্নাকে ট্রাইব্যুনাল
ট্রেন ছাড়ার পর স্টেশন মাস্টারকে বলে ট্রেনে ওঠার সুযোগ নেই
ট্রেন ছাড়ার পর স্টেশন মাস্টারকে বলে ট্রেনে ওঠার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় আইনি লড়াই করতে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহিরুল ইসলাম (জেড আই) খান পান্নার আবেদন শুনানিতে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এ কথা বলা হয়।
এর আগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে মামলা লড়তে চেয়ে সিনিয়র আইনজীবী জেড আই খান পান্নার পক্ষে তার জুনিয়র আইনজীবী নাজনীন আরা ট্রাইব্যুনালে আবেদন করেছিলেন।
শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী পান্নার প্রসঙ্গ টেনে ট্রাইব্যুনাল-১ বলেন, শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্র আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছে। মামলার এ পর্যায়ে এসে পলাতক আসামির পক্ষে নতুন করে আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ নেই। তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার পর স্টেশন মাস্টারকে বলে ট্রেনে ওঠার সুযোগ নেই।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ভারতে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা লড়তে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) এই আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
আইনজীবী জেড আই খান পান্নার আবেদনের পর ট্রাইব্যুনাল জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কোনো আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব নয়। আপনি একটি সিভি দিয়ে রাখতে পারেন পরবর্তীতে কোন মামলায় ওনাকে সুযোগ থাকলে দেওয়া হবে।
এর আগে, জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত (স্টেট ডিফেন্স) আইনজীবী হতে আবেদন করেছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এইচ এ এম জহিরুল ইসলাম খান (পান্না), যিনি জেড আই খান পান্না নামেও পরিচিত। আদালতে আইনজীবী জেড আই খান পান্নার পক্ষে আবেদনটি উপস্থাপন করেন আইনজীবী নাজনীন নাহার। তবে তার আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেল খারিজ করে এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
ট্রাইব্যুনালের বিচার কার্যক্রমের শুরুতে কথা বলেন আইনজীবী নাজনীন নাহার। তিনি বলেন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না আজকে এখানে আসতে পারেননি। তিনি শেখ হাসিনার পক্ষে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ পেতে চান। এ কথা ট্রাইব্যুনালকে জানানোর জন্য তাকে (নাজনীন) বলেছেন।
তখন ট্রাইব্যুনাল বলেন, ‘শেখ হাসিনার পক্ষে স্টেট ডিফেন্স (রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী) নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এটা ওভার (শেষ)। উনি সিভি দিলে অন্য মামলায় তাকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টি দেখবেন। তা ছাড়া কাকে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হবে, সেটা ট্রাইব্যুনালের বিষয়।’
ট্রাইব্যুনাল আরও বলেন, ‘তিনি প্রসিডিওর জানেন। যে মামলায় আসামি উপস্থিত নাই, এমন পার্টিকুলার মামলায় আসবেন কেন? তা ছাড়া এ মামলায় যখন ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হচ্ছিল, তখন তিনি এসে বলতে পারতেন। তখন বিবেচনা করা যেত কাকে নিয়োগ দেওয়া হবে। ট্রেন স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার পর মাস্টারকে বললেন, ট্রেনে উঠিয়ে দেন।’ একপর্যায়ে আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, শেখ হাসিনার পক্ষে যাকে স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাকে সহযোগিতা করতে চান জেড আই খান পান্না। এই আবেদনও খারিজ করে দেন ট্রাইব্যুনাল।
এফএইচ/জেএইচ/জিকেএস