সাবেক আইজিপির জবানবন্দি

জুলাই আন্দোলনে মারণাস্ত্র ব্যবহারে অতিউৎসাহী ছিলেন হাবিব-হারুন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৫২ পিএম, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৫
সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব ও সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ/ ফাইল ছবি

গত বছরের (২০২৪ সালের) জুলাই গণঅভ্যুত্থান দমনে মারণাস্ত্র ব্যবহার, হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও ব্লক রেইডের সিদ্ধান্ত হয় রাজনৈতিকভাবে। আন্দোলন দমনে লেথাল উইপেন (মারণাস্ত্র) ব্যবহারের নির্দেশনা এসেছিল তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে। মারণাস্ত্র ব্যবহারে অতিউৎসাহী ছিলেন সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব ও সাবেক ডিবিপ্রধান হারুন অর রশীদ।

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় রাজসাক্ষী সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন তার জবানবন্দিতে এসব তথ্য জানান। জুলাই আন্দোলন দমানোর বিষয়ে নিজেদের মধ্যে কীভাবে সিদ্ধান নিয়েছেন- এমন প্রশ্নে এসব তথ্য জানান তিনি।

মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) ট্রাইব্যুনাল ১- এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক প্যানেলের জবানবন্দিতে তিনি এ কথা জানান। এদিন বেলা ১১টা ৫০ মিনিটে জবানবন্দি পেশ শুরু করেন জুলাই আন্দোলনের সময়ে পুলিশ প্রধানের দায়িত্বে থাকা মামুন।

জবানবন্দিতে সাবেক এই আইজিপি ট্রাইব্যুনালে বলেন, আন্দোলন দমনে মারণাস্ত্র ব্যবহার, হেলিকপ্টার থেকে গুলি ও ব্লক রেইডের সিদ্ধান্ত হয় রাজনৈতিকভাবে। লেথাল উইপেন ব্যবহারের নির্দেশনা এসেছিল শেখ হাসিনার কাছ থেকে। এছাড়া সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান হাবিব ও ডিবির হারুন ছিলেন মারণাস্ত্র ব্যবহারে অতিউৎসাহী।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের ১৮ জুলাই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আমাকে ফোন করে বলেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি লেথাল উইপেন ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের নির্দেশে জুলাই-আগস্টে গণহত্যা চালানো হয়। এসব ঘটনায় অনুতপ্ত হয়ে আইজিপি থাকাকালে নির্বিচারে মানুষ হত্যার জন্য নিহত, আহতের পরিবার, দেশবাসী এবং ট্রাইব্যুনালের কাছে ক্ষমা চান সাবেক এই পুলিশ মহাপরিদর্শক।

এসময় মামুন আরও বলেন, র‌্যাব-১ এ টিআইএফ নামে গোপন বন্দিশালা ছিল। র‌্যাবের অন্যান্য ইউনিটেও ছিল এমন বন্দিশালা। রাজনৈতিক ভিন্নমত ও সরকারের জন্য হুমকি হয় এমন মানুষদের ধরে আনা হতো এখানে।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে আসতো এসব নির্দেশনা। কখনো নির্দেশনা দিতেন শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক। এছাড়া আয়নাঘরে আটক ও ক্রসফায়ারে হত্যার মতো কাজগুলো করতেন র‌্যাবের এডিসি (অপারেশন ও গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক)।

এর আগে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে জুলাই আন্দোলনে আহত, শহীদ পরিবারের সদস্য, চিকিৎসকসহ ৩৫ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ মাসেই এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হবে বলে আশা করছে প্রসিকিউশন।

এফএইচ/কেএসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।