প্রিজন ভ্যানে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, অন্যায়ভাবে আটকের অভিযোগ
ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন আদালত চত্বরে প্রিজন ভ্যান থেকে ‘জয় বাংলা’ সহ নানান রাজনৈতিক স্লোগান দেন কয়েকজন আসামি। এসময় এক আসামি অভিযোগ করেন, তাকে অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় গাজীপুর মহানগর পুলিশের একটি প্রিজন ভ্যানে করে তাদের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়ার প্রস্তুতির সময় এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আদালতের মূল ভবনের সামনে প্রিজন ভ্যান অপেক্ষমাণ থাকাকালে আলোচিত এক মামলার বিষয়ে আইনজীবীরা গণমাধ্যমে বক্তব্য দিচ্ছিলেন। সে সময় ভ্যানের ভেতর থেকে আসামিরা উচ্চস্বরে কথা বলতে শুরু করেন। প্রতিবাদের ভঙ্গিতে তারা সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘আমাদের অন্যায়ভাবে আটক করা হয়েছে।’
তারা দাবি করেন, তারা শিক্ষার্থী, পরীক্ষার হল থেকে তুলে এনে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এরপর তারা ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, ‘শেখ হাসিনা আসবে, বাংলাদেশ হাসবে’ এমন নানান স্লোগান দিতে থাকেন।
কিছুক্ষণ পর ভ্যানের ভেতর থেকেই এক আসামি সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘পরীক্ষা দেওয়ার সময় আমাকে আটক করা হয় এবং এক বছরের অধিক সময় কারাগারে আছি।’ বিষয়টি গণমাধ্যমে তুলে ধরার অনুরোধ জানান তিনি।
আরও পড়ুন
ঢাকায় কয়েক মিনিটে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ, নারী আহত
নিরাপত্তার ঘেরাটোপে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল যেন ব্যাহত না হয়
নিজের পরিচয় দিয়ে ওই ব্যক্তি জানান, তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের দ্বাদশ ব্যাচের শিক্ষার্থী আসিফ আহম্মেদ অভি। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সম্পাদক ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন। তবে তাৎক্ষণিক তার মামলার বিষয়ে তথ্য জানা যায়নি।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২৪ সালের ২২ অক্টোবর সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা দিতে এসে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের হাতে আটক হন আসিফ আহম্মেদ অভি। ওইদিন সকালে পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাকে ঘেরাও করেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে বিভাগের চেয়ারম্যান তাকে নিরাপত্তার স্বার্থে একটি কক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখেন।
পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্তে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে কোতোয়ালি থানা পুলিশের কাছে তাকে হস্তান্তর করা হয়। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত হামলার ঘটনায় অভি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। পাশাপাশি সে সময় মেসে আশ্রয় নেওয়া শিক্ষার্থীদের তথ্য পুলিশের কাছে সরবরাহ করার অভিযোগও তোলা হয় তার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক তখন গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন, পরীক্ষার সময় উদ্ভূত অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে এবং শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপাচার্যের সম্মতিক্রমে অভিকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
কোতোয়ালি থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক জানিয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছ থেকে অভিকে বুঝে নেওয়া হয়েছে এবং অভিযোগ যাচাই করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এমডিএএ/কেএসআর