জি কে শামীমের চার দেহরক্ষীর জামিন মেলেনি হাইকোর্টে

আলোচিত যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের চার দেহরক্ষীকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তবে, তাদের কেন জামিন দেয়া হবে না- তা জানতে মর্মে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আসামিরা হলেন- মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম, মো. শহীদুল ইসলাম, মো. কামাল হোসেন ও মো. শামশাদ হোসেন।
আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
এ-সংক্রান্ত বিষয়ে শুনানিতে সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে আজ দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশিদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। আসামি পক্ষে ছিলেন আইনজীবী শামীম সরদার।
মামলার এজাহারে বলা হয় জি কে শামীমকে অবৈধ চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক এবং জুয়ারি ব্যবসায়ী (ক্যাসিনো)-এর সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে গ্রেফতার করা হয়। আর এই আসামিরা হলেন তার দুষ্কর্মের সহযোগী। তাদের গ্রেফতার করে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর গুলশান থানায় মামলা করা হয়। মামলা নং ২৯। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তারা জি কে শামীমের অর্থ পাচারের লক্ষ্যে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা দখলে রাখাসহ সব অপকর্মের সহযোগী।
এর আগে ২০১৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত তাদের জামিন আবেদন না মঞ্জুর করলে তারা হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। ওই আবেদন শুনানিতে হাইকোর্ট আজ এই আদেশ দেন।
এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, জি কে শামীমের চার সহযোগীকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। তবে, তাদের কেন জামিন দেয়া হবে না- তা জানেত চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আগামী ১০ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
২০১৯ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সাত দেহরক্ষীর জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর হাকিম আতিকুর রহমান। সাত দেহরক্ষী হলেন- দেলোয়ার হোসেন, মুরাদ হোসেন, জাহিদুল ইসলাম, সহিদুল ইসলাম, কামাল হোসেন, সামসাদ হোসেন ও আমিনুল ইসলাম।
এর আগে একই বছরের (২৬ সেপ্টেম্বর) গুলশানের অস্ত্র আইনের মামলায় চারদিনের রিমান্ড শেষে সাত দেহরক্ষীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ফজলুল হক।
অন্যদিকে তাদের আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকা মহানগর হাকিম হাবিবুর রহমান চৌধুরী ওই সাতজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আবেদনপত্রে তদন্ত কর্মকর্তা উল্লেখ করেন, চারদিনের রিমান্ডে নিয়ে আসামিদের নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। তাদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যাদি মামলার তদন্তকাজে যথেষ্ট সহায়ক হবে। তাদের দেয়া তথ্য ও নাম-ঠিকানা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। আসামিরা জামিনে মুক্তি পেলে পলাতক হওয়ার আশঙ্কা আছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
২১ সেপ্টেম্বর অবৈধ অস্ত্র ও মাদক মামলায় আলোচিত যুবলীগ নেতা জি কে শামীমের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এর মধ্যে অস্ত্র মামলায় পাঁচদিন ও মাদক মামলায় পাঁচদিন। এ ছাড়া সাত দেহরক্ষীকে অস্ত্র মামলায় চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজির সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গত ২০ সেপ্টেম্বর যুবলীগ নেতা জি কে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীকে আটক করে র্যাব।
এফএইচ/জেএইচ/জেআইএম