মানবতাবিরোধী অপরাধ: ঠাকুরগাঁওয়ের আবেদের সাফাই সাক্ষী ১৬ মার্চ

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপহরণ, হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে করা মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের আবেদ হোসেনের (৬৫) বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের সর্বশেষ সাক্ষী ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) জবানবন্দি ও জেরা শেষ হয়েছে। এরপর মামলায় আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষীর জন্য আগামী ১৬ মার্চ পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রেজিয়া সুলতানা চমন বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন। বুধবার (১ জানুয়ারি) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম।
আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর মো. সাহিদুর রহমান। তার সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর রেজিয়া সুলতানা চমন। অন্যদিকে আসামিপক্ষের শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার পালোয়ান।
প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রেজিয়া সুলতানা চমন জাগো নিউজকে জানান, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই থেকে এ মামলার তদন্ত শুরু করে ২০১৯ সালের ৮ আগস্ট শেষ করা হয়। ওইদিন আসামির বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। আসামি আবেদ হোসেন একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন মে থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের অপরাধ সংঘটিত করেন বলে মামলার অভিযোগে উল্লেখ রয়েছে।
তিনি বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী থানার বোবড়া এলাকার আবু তৈয়বের ছেলে আবেদ হোসেন। তাকে ২০১৯ সালের ২৫ জুন গ্রেফতার করা হয়। তিনি অসুস্থ। আসামির বিরুদ্ধে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপহরণ, হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে।
আসামির বিরুদ্ধে যত অভিযোগ
প্রথম অভিযোগে বলা হয়, একাত্তরে মে মাসের শেষের দিকে ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী থানাধীন আধারিদিঘীর পাড়ে পাকিস্তান আর্মি ও তাদের দোসর স্থানীয় রাজাকার আবেদ হোসেনসহ অন্য রাজাকাররা আধারদিঘীর পাশ্ববর্তী বোবড়া ও অন্য গ্রাম থেকে সাতজন নিরীহ লোককে আটক করে জোরপূর্বক ব্যাংকার তৈরির কাজে শ্রমসাধ্য মাটি খননের কাজ করায়। ব্যাংকার তৈরির কাজে যেতে না চাইলে তখন আসামি আবেদ হোসেন ও তার সহযোগীরা জোরপূর্বক কাজে যেতে বাধ্য করতো।
দ্বিতীয় অভিযোগে বলা হয়, একাত্তর সালে যুদ্ধচলাকালীন সময়ে পাকিস্তানি আর্মি ও রাজাকারদের অবস্থান সম্পর্কে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের খোঁজ খবর দিয়ে সহায়তা করার কারণে পবেদ আলী, দুমপেল ও মজনুকে ধরে নিয়ে তীরনই নদীর পাড়ে গুলি করে মরদেহ পানিতে ফেলে দেয়। ওই ঘটনায় পবেদ আলী হাতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় জীবিত উদ্ধার হলেও বাকি দুজনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
তৃতীয় অভিযোগে বলা হয়, আহত পবেদ আলীকে আবার ধরে নিয়ে তীরনই নদীর পাড়ে নিয়ে গুলি করে মরদেহ পানিতে ফেলে দেয়। পরে পবেদ আলীর মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ আসামির বিরুদ্ধে ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই থেকে তদন্ত শুরু হয়। আসামির রাজনৈতিক পরিচয়ে জামায়াতে ইসলামীর সমর্থক বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এফএইচ/এএএইচ/এএসএম