মানবতাবিরোধী অপরাধ: শর্তসাপেক্ষে চট্টগ্রামের শওকাতুলের জামিন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:১৭ এএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির সৈয়দ শওকাতুল ইসলাম ওরফে পাতলা ডাক্তারের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম।

মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী প্রসিকিউটর সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী জাগোনিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

আরও পড়ুন>>মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ময়মনসিংহের সুলতান ফকির গ্রেফতার

তিনি বলেন, আসামি অসুস্থ ও বয়স্ক বলে তার পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হয়েছিল। পরে তার আবেদন শর্ত দিয়ে মঞ্জুর করেন আদালত। জামিনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের শর্তগুলো হলো- অসুস্থতার চিকিৎসা দিলেও রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীদের সঙ্গে কোনো ধরনের যোগাযোগ রক্ষা করা যাবে না, ঢাকায় নিকটাত্মীয়ের বাসায় থাকতে হবে এবং নিয়মিত ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে হবে।

‘এছাড়াও আমরা রাষ্ট্রপক্ষ থেকে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছি। এখন অভিযোগ গঠনের (ফরমাল চার্জ) বিষয়ে শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে প্রসিকিউশনের তিন মাস সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার শুনানির দিন পিছিয়ে আগামী ২ এপ্রিল পরবর্তী দিন ঠিক করেছেন আদালত। ওইদিন মামলায় অভিযোগ গঠনের (ফরমাল চার্জ) বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।’

আদালতে এদিন রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর মো. মুখলেসুর রহমান বাদল ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী। আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী এমএইচ তামিম।

আরও পড়ুন>> মানবতাবিরোধী অপরাধ: ত্রিশালের মুকুলসহ ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

এর আগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির সৈয়দ শওকাতুল ইসলাম ওরফে পাতলা ডাক্তারের বিরুদ্ধে ২০২২ সালের ২৮ নভেম্বর তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

ওইদিন ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার প্রধান সমন্বয়ক এম সানাউল হক এ কথা জানান। এটি তদন্ত সংস্থার ৮৬তম প্রতিবেদন।

এর আগে ২০১৯ সালের ৬ মার্চ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়। এরপর তিন বছর ৮ মাস ২০ দিন অনুসন্ধান শেষে ২০২২ সালের ২৬ নভেম্বর প্রতিবেদন প্রস্তুত করার পর প্রসিকিউশনের কাছে তা দাখিল করা হয়। এরপর সেটি ওইদিনই প্রকাশ করা হয়।

আসামির বিরুদ্ধে ১০ হত্যাকাণ্ডসহ তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে চারজনকে ধর্ষণ, দেড় শতাধিক লোককে আটক-নির্যাতন এবং দুই শতাধিক বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করার অভিযোগ আনা হয়।

আরও পড়ুন>>মানবতাবিরোধী অপরাধ: খুলনার ৯ আসামির পক্ষে প্রথম সাক্ষ্য

এ মামলায় আসামি ছিলেন দুজন। এর মধ্যে সৈয়দ ওমর ফারুক ওরফে সৈয়দ মো. ফারুক হায়াত করোনায় মারা গেছেন। তিনি ২০২১ সালের ৮ মার্চ মারা যান। ওইদিনই আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিল ট্রাইব্যুনাল।

তদন্তে জব্দ তালিকাসহ মোট ১৪৪ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনের সঙ্গে সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়ে পূর্ববর্তী তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও) ২ জন এবং বর্তমান তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ৩ জন (আইও) মামলাটি তদন্ত করেছেন।

অপরাধ সংঘটনের স্থান হলো চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি থানার বিভিন্ন এলাকায়। মামলায় ১০ জনকে হত্যা, সম্ভ্রান্ত ৪ নারীকে ধর্ষণ, আসামির ছোড়া গুলিতে ১ জন গুলিবিদ্ধ জখম, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দেড় শতাধিক লোককে আটক ও নির্যাতন এবং প্রায় দুই শতাধিক বাড়িঘরে লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ আনা হয়।

এফএইচ/ইএ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।