মানবতাবিরোধী অপরাধ
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে কারাগারে পাঠালেন ট্রাইব্যুনাল

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাবা-ছেলেসহ গাইবান্ধার পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণার পর দণ্ড নিয়ে সাড়ে তিন বছর পালিয়ে থাকা দুই আসামি র্যাবের হাতে ধরা পড়েছেন। ওই দুই আসামিকে করাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যারিস্টার শেখ মোশফেক কবীর।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. জাফিজার রহমান খোকা (৬৪) ও মো. আবদুল ওয়াহেদ মণ্ডল (৬২)। সাত বছর পলাতক ছিলেন তারা। মামলায় মোট আসামি ছিলেন ছয়জন। রায় ঘোষণার আগে থেকে চারজন পলাতক ছিলেন। গ্রেফতার হয়ে কারাগারে ছিলেন একজন। মামলা চলাকালীন একজন মারা যান।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও)। ট্রাইব্যুনালের অন্য দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলম। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের শুনানিতে ছিলেন প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী, ঋষিকেশ শাহা, ব্যারিস্টার শেখ মোশফেক কবীর ও সাবিনা ইয়াসমিন খান মুন্নী।
২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বাবা-ছেলেসহ গাইবান্ধার পাঁচ আসামির মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করেছিলেন ট্রাইব্যুনাল। ওইদিন ১৭৬ পৃষ্ঠার রায়ে আদালত বলেছেন, আসামির বিরুদ্ধে প্রসিকিউশনের আনা চারটি অভিযোগই সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিটি অভিযোগেই গ্রেফতার ও পলাতক সব আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়।
মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে সাড়ে তিন বছর আগে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত দুই আসামি র্যাবের হাতে ধরা পড়েন গত ১৭ ফেব্রুয়ারি। যদিও তারা মামলায় বিচার শুরু হওয়ার পর থেকে সাত বছর পলাতক ছিলেন। তাদের দুজনের বাড়ি গাইবান্ধায়। এর মধ্যে ওয়াহেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন।
গ্রেফতারের পর র্যাব-৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ জানান, বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর মুগদার উত্তর মাণ্ডায় ছেলের সঙ্গে দেখা করতে এসে ধরা পড়েন ওয়াহেদ মণ্ডল। রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে জাফিজারকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, এ মামলায় মৃত্যুদণ্ড নিয়ে ফেরারী জীবনে মারা গেছেন আব্দুল জব্বার ও রঞ্জু মিয়া। এখনো পলাতক রয়েছেন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামি মোন্তাজ আলী। আবদুল জব্বার ছিলেন গ্রেফতার জাফিজারের বাবা। আসামিদের মধ্যে আজগর হোসেন খান মারা গেছেন।
২০১৯ সালের ২১ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার শুনানি শেষে রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রাখেন ট্রাইব্যুনাল। পরে রায় ঘোষণার জন্য ট্রাইব্যুনাল ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেন রায় ঘোষণার আগের দিন। তারই ধারাবাহিকতায় রায় ঘোষণা করা হয়।
এফএইচ/এএএই/জিকেএস