শরিয়াহ ব্যাংকিং চালু করতে গভর্নরকে লিগ্যাল নোটিশ

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০৪ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর যথাযথ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে পৃথক শরিয়াহ ব্যাংকিং বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। লিগ্যাল নোটিশে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে বিবাদী করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান।

লিগ্যাল নোটিশে ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে পৃথক একটি নিজস্ব শরিয়াহ বোর্ড গঠন করতে হবে। না হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের বিষয়ে সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হবে।

নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক হলো বাংলাদেশের একমাত্র কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাংলাদেশের প্রচলিত আইন দি বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। উক্ত আইনের ধারা ৭এ (এফ) অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ হলো সব ব্যাংককে ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করা। বাংলাদেশে দুই ধরনের ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রচলিত আছে, একটি সুদভিত্তিক কনভেনশনাল ব্যাংকিং, অন্যটি হলো ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকিং।

বিভিন্ন সংবাদপত্রের সূত্র অনুযায়ী, বাংলাদেশে দশটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী শরিয়াভিত্তিক ব্যাংক রয়েছে। এছাড়া ১১টি প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ২৩টি ইসলামী ব্যাংকিং শাখা এবং ১৩টি প্রচলিত বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৫১১টি ইসলামী ব্যাংকিং উইন্ডোসমূহ ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক আর্থিক পরিষেবা প্রদান করে।

নোটিশে বলা হয়, বাংলাদেশের জনগণ ও ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞদের বিস্তর অভিযোগ আছে যে, বাংলাদেশে প্রচলিত ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ যথার্থভাবে ইসলামী শরিয়াহ অনুসরণ করছে না। তারা মূলত বাংলাদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতি নিয়ে ব্যবসা করছে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক এসব ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের যথাযথ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

আরও বলা হয়েছে, দি বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ এর ধারা ৭এ (এফ) অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যতম প্রধান কাজ হলো সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণ ও তদারকি করা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় এই যে, বাংলাদেশে ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে যথাযথ তদারকি ও নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকেরই কোনো শরিয়াহ ব্যাংকিং বিভাগ নেই। এছাড়া শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রোডাক্টগুলো যাচাই-বাছাই করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো শরিয়াহ বোর্ড নেই। ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক এ দেশের শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিতে কোনোরূপ ভূমিকা রাখতে পারছে না এবং বাংলাদেশ ব্যাংক তার আইনি কর্তব্য পালনে ব্যর্থ হয়েছে।

এ অবস্থায় দি বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার, ১৯৭২ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংককে অবশ্যই তার আইনি দায়িত্ব পালনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকিতে অবিলম্বে বাংলাদেশ ব্যাংকে পৃথক শরিয়াহ ব্যাংকিং বিভাগ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাশাপাশি দেশের শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের বিভিন্ন প্রোডাক্ট যথাযথভাবে পর্যালোচনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নিজস্ব শরিয়াহ বোর্ড প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এ নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকে পৃথক শরিয়াহ ব্যাংকিং বিভাগ প্রতিষ্ঠা করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নিজস্ব শরিয়াহ বোর্ড গঠন করতে হবে। অন্যথায় এ বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে বাংলাদেশ সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টে রিট আবেদন দায়ের করা হবে।

এফএইচ/এমআইএইচএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।