শ্রম আইন লঙ্ঘন

ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে পরবর্তী যুক্তিতর্ক ৩০ নভেম্বর

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:১৬ এএম, ২৭ নভেম্বর ২০২৩
ফাইল ছবি

শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ চারজনের বিষয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ করা হয়েছে।

রোববার (২৬ নভেম্বর) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালতে ড. ইউনূসসহ চারজনের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন চলছে।

আদালতে বাদীপক্ষে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর সৈয়দ হায়দার আলী যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। ড. ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন। সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার তানভীর আহমেদ ও অ্যাডভোকেট এসএম মিজানুর রহমান।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অসমাপ্ত অবস্থায় ৩০ নভেম্বর দুপুর ২টায় পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করা হয়েছে।

যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের বিষয়ে ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ মামলা মিথ্যা। সাক্ষীও মিথ্যা। সাক্ষীদের একজনের সঙ্গে আরেকজনের মিল নেই। তিনি বলেন, এ মামলার প্রথম সাক্ষী বলেছে চেকলিস্টে তারা তিনজন স্বাক্ষর করেছে। আর চতুর্থ সাক্ষী বলেছে তারা পাঁচজন স্বাক্ষর করেছে। আমাদের সত্যায়িত অনুলিপিতে এটা আছে। তবে আদালত বলেছেন প্রথম সাক্ষীর স্থানে পাঁচজনের স্বাক্ষরের কথা আছে। এটি এমন হওয়ার কথা নয় জানালে, আদালত বিষয়টি দেখবেন বলে জানিয়েছেন।

ব্যারিস্টার মামুন অভিযোগ করেন, গত ২১-২২ তারিখে বংলাদেশের পররাষ্ট্র পন্ত্রণালয় থেকে জাতিসংঘে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। সেই চিঠিতে বলা হয়েছে, ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের দেনা পাওনা নিয়ে মামলা আছে। অথচ আপনারা জানেন ড. ইউনূসের ব্যক্তিগত কোনো সম্পত্তি নেই। তিনি সব দেশের জন্য দান করেছেন। সামাজিক ব্যবসায় উনি বিনা বেতনে, বিনা পারিশ্রমিকে ২৫টি সামাজিক ব্যবসা গড়ে তুলেছেন। যেখানে মামলা চলছে। কিছু দিন পর রায় হবে। সেখানে সরকারের পক্ষ থেকে এ ধরনের কথা জাতিসংঘে জানানো হয়। তা হলে সেটা অত্যান্ত বিভ্রান্তিকর এবং আদালতকে প্রভাবিত করার আশঙ্কা থাকে। এই জিনিসটা আমাদের শঙ্কিত করেছে।

এ দিন ড. মুহাম্মদ ইউনূস পঞ্চম বারের মতো শ্রম আদালতে হাজির হন। তার বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগের মামলায় হাজিরা দিতে বেলা ১২টার দিকে আদালতে হাজির হন। বেলা সাড়ে ১২টার থেকে ড. ইউনূসের মামলার শুনানি শুরু হয়। এরপর দুপুরে এক ঘণ্টা বিরতী দিয়ে ২টা ৩০ মিনিট থেকে আবারো আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে ড. ইউনূসের পক্ষে আবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের শুনানি হয়। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত আদালতের কার্যক্রম চলে।

এর আগে গত ২০ নভেম্বর ড.ইউনূসসহ চারজনের পক্ষে যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করা হয়। তবে যুক্তিতর্ক অসমাপ্ত অবস্থায় ২৬ নভেম্বর পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন আদালত।

৬ নভেম্বর এ মামলার বাদীপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। ওইদিন আদালত ৯ নভেম্বর ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ এ মামলার চার আসামির ফৌজদারী কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য রাখার দিন রাখেন।

২ নভেম্বর এ মামলায় চতুর্থ সাক্ষী মো. মিজানুর রহমান আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর ৬ নভেম্বর তাকে আসামিপক্ষ জেরা করেন। এর আগে ২৬ অক্টোবর তৃতীয় এবং ১৮ অক্টোবর এ মামলার দ্বিতীয় সাক্ষী হাদিউজ্জামানের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। ১১ অক্টোবর মামলার বাদি শ্রম পরিদর্শক তরিকুল ইসলামকে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান বাদি হয়ে ড. ইউনূসসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া, শ্রমিকদের চাকরি স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করায় শ্রম আইনের ৪-এর ৭, ৮, ১১৭ ও ২৩৪ ধারায় অভিযোগ আনা হয়। এ মামলায় ড. ইউনূস ছাড়াও গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহানকে বিবাদি করা হয়।

এফএইচ/এসএনআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।