সহকর্মীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব রাখা কি ভালো

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:২৬ পিএম, ২৭ জুলাই ২০২৫

আপনি কি কখনো অফিসের কারো কাছে থেকে ফেসবুক বা অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পেয়েছেন? বিশেষ করে ক্রিয়েটিভ বা মিডিয়া ফিল্ডে কাজ করলে, সহকর্মীরা আপনাকে অনলাইনে যুক্ত করতে চায় – এটি এখন অনেক অফিসেই স্বাভাবিক বিষয়। তবে ভেবে দেখা উচিৎ – সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্ব কি পেশাদার জীবনে সহায়ক, নাকি ঝুঁকিপূর্ণ?

‘হু ইজ হোস্টিং দিস’ পরিচালিত এক সার্ভেতে ৯০০ জন চাকরিজীবীর মত নিয়ে একটি গবেষণার ফলাফল থেকে জানা গেছে কৌতুহলদ্দীপক কিছু চিত্র-

>> ৫১ শতাংশ মানুষ আশঙ্কা করেন যে, অফিসের বস বা সহকর্মীরা তাদের জন্য সমস্যা তৈরি করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রোফাইল ব্যবহার করতে পারেন।

>> প্রায় ২০ শতাংশ নিয়োগকর্তা জানান যে, তারা অনেক সময় চাকরিপ্রার্থীর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম দেখে তাদের বাদ দিয়েছেন।

>> ১৬ শতাংশ প্রার্থী বলেছেন যে, ইন্টারভিউতে ভার্চুয়াল প্রোফাইলের কারণে তাদের বিষয়ে নেতিবাচক ধারনা পোষণ করা হয়েছে।

সহকর্মীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব রাখা কি ভালো

এসব তথ্য প্রমাণ করে যে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বন্ধুত্বই স্বাভাবিক হলেও এর প্রভাব গভীর ও বিস্তৃত হতে পারে। তাই আপনি নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্রোফাইলটি একান্তই ব্যক্তিগত রাখবেন নাকি সেটি নিজের পেশার সঙ্গে যুক্ত করবেন, এই সিদ্ধান্তটি ভেবেচিন্তে নেওয়া খুব জরুরি।

সহকর্মীকে ভার্চুয়াল বন্ধুতালিকায় রাখার সুবিধা

১. টিম বন্ধন মজবুত হয়, সহযোগিতা ও বোঝাপড়া বাড়ে।

২. কাজের পরিবেশ সৃজনশীল ও খোলামেলা হয়।

৩. মাইক্রো-নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে, যা উন্নতি ও পরামর্শের সুযোগ বাড়ায়।

সহকর্মীকে ভার্চুয়াল বন্ধুতালিকায় রাখার অসুবিধা

১. প্রাইভেসি লঙ্ঘন: আপনার সব পোস্ট, ছবি বা স্ট্যাটাস সহকর্মীরা দেখলে তারা আপনার ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে অনেক বেশি তথ্য জানবে। এটি আপনার কাছে কখনো কখনো বিরক্তিকর লাগতে পারে।

২. অফিস রাজনীতি: কোনো সহকর্মীর সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে বেশি যোগাযোগ তৈরি হলে পক্ষপাতদুষ্টতা নিয়ে সন্দেহ উঠতে পারে।

৩. গোপন তথ্য ফাঁস: আপনার ব্যক্তিগত তথ্য ভুলভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে।

৪. চাকরিতে প্রোফাইল যাচাইয়ের প্রভাব: নিয়োগকর্তা প্রার্থী নিয়োগের পূর্বে প্রোফাইল দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার ক্যাজুয়াল জীবনযাপন, রাজনৈতিক মতাদর্শ, পারিবারিক সম্পর্কের মতো স্পর্শকাতর বিষয়গুলো তাদের চোখে পড়বে।

সহকর্মীর সঙ্গে ভার্চুয়াল বন্ধুত্ব রাখা কি ভালো

আপনি যদি ভার্চুয়াল জগৎটি কর্মক্ষেত্র থেকে আরাদা রাখতে চান, তাহলে কী করবেন?

১. কাজের প্রোফাইল আলাদা রাখুন।

২. প্রাইভেসি সেটিংস সঠিকভাবে ব্যবহার করুন। সব পোস্ট সবাইকে দেখানোর দরকার নেই।

৩. সোশ্যাল স্ক্রিনিং সম্পর্কে সচেতন হন।

৪. সব সময় বিচক্ষণ থাকুন। অফিস ইস্যুকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা করা এড়াতে পারবেন।

৫. প্রয়োজনে বিরতি নিন। অতিরিক্ত ইন্টার‌্যাকশন কাজের মনোযোগ কমিয়ে দেয়।

সহকর্মীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাখা উপকারী হতে পারে, বিশেষ করে ভালো বন্ধুত্ব ও সমন্বয়ের ক্ষেত্রে। কিন্তু যদি ভুলভাবে ব্যবহৃত হয়, তাহলে তা পেশাগত জীবনের জন্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। তাই বন্ধু যোগ করার আগে একটু ভাবুন, নিজের সম্মান এবং প্রাইভেসি বজায় রেখে থাকুন।

সূত্র: হু ইজ হোস্টিং দিস, সেলফ ডট কম, বিজনেস নিউজ ডেইলি, ফোর্বস্

এএমপি/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।