মুরগির কাঁচা মাংস কতদিন পর্যন্ত ফ্রিজে রাখা যায়
বেশিরভাগ মানুষ তাদের প্রোটিনের চাহিদা পূরণের জন্য খাদ্যতালিকায় মুরগির মাংস রাখেন। অনেকেই মুরগি কিনে ফ্রিজে সংরক্ষণ করেন, তবে এটি সাবধানে সংরক্ষণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সামান্যতম অসাবধানতাও খাদ্যে বিষক্রিয়া, পেটে ব্যথা, বমি এবং ডায়রিয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক কাঁচা মুরগির মাংস ফ্রিজে সংরক্ষণের সময় কী কী উপায় মানতে হবে-
ফ্রিজে সংরক্ষণ
কাঁচা মুরগি অত্যন্ত পচনশীল একটি খাদ্য। সাধারণ ফ্রিজে, অর্থাৎ ৪° সেলসিয়াস বা তার নিচের তাপমাত্রায়, কাঁচা মুরগি মাত্র ১-২ দিন পর্যন্ত নিরাপদে রাখা যায়। এ সময়ের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে, যা রান্নার পরও স্বাস্থ্য ঝুঁকি সৃষ্টি করতে পারে।

মুরগি যখন কেটে প্যাকেট করা হয়, তখন এর ভেতরের ও বাইরের ব্যাকটেরিয়ার সংস্পর্শের পরিমাণ বেড়ে যায়, ফলে মাংস দ্রুত নষ্ট হয়। এর সংরক্ষণকালও কমে যায়। তাই প্যাকেটকৃত মুরগি কেনার ২৪-৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রান্না করা উচিত।
দীর্ঘ সময়ের জন্য মুরগি সংরক্ষণের উপায়
১. দীর্ঘ সময়ের জন্য মুরগি সংরক্ষণ করতে চাইলে ফ্রিজের পরিবর্তে ডিপ ফ্রিজ ব্যবহার করুন। ফ্রিজারের তাপমাত্রা -১৮° সেলসিয়াস বা তার কম রাখা নিরাপদ। ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজে কাঁচা পুরো মুরগি সাধারণত প্রায় ১ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়, আর ছোট ছোট টুকরা করে রাখলে ৬-৮ মাস পর্যন্ত ভালো থাকে।

২. রান্না করা মাংস সাধারণ ফ্রিজে কয়েক দিন, আর ফ্রিজারে ২-৬ মাস পর্যন্ত রাখা যায়। তবে সবসময় বায়ুরোধী ব্যাগে প্যাক বা মুখবন্ধ পাত্রে সংরক্ষণ করতে হবে।
৩. কাঁচা মাংস কখনোই সবজি, দুধ বা দইয়ের পাশে রাখা উচিত নয়। হিমায়িত মুরগিতে ব্যাকটেরিয়া কমে এবং পচন রোধ হয়। তবে বরফ গলানোর পর মুরগি অবশ্যই রান্না করতে হবে। এছাড়া কাঁচা মুরগির গায়ে লেগে থাকা পানি ধুয়ে ফেললে ব্যাকটেরিয়া ছড়াতে পারে, তাই পানি ধোয়ার থেকে বিরত থাকতে হবে।

মুরগির মাংস নষ্ট হলে বোঝার উপায়
মুরগির মাংস নষ্ট হয়েছে কি না বোঝার জন্য কিছু লক্ষণ খেয়াল করতে হবে। যদি মুরগির গন্ধ খারাপ হয়ে যায়, রং ধূসর বা হলুদ হয়ে যায়, গঠন পাতলা অনুভূত হয়, কিংবা প্যাকেট ফুলে যায়, তাহলে তা ব্যবহার করা উচিত নয়। এমন হলে মাংস রান্না বা খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। কারণ নষ্ট কাঁচা মুরগিতে থাকা ব্যাকটেরিয়া যেমন সালমোনেলা, লিস্টেরিয়া বা ক্যাম্পাইলোব্যাক্টর গুরুতর অসুস্থতা সৃষ্টি করতে পারে।
কাঁচা মুরগি নিরাপদে সংরক্ষণ করা এবং সতর্কতার সঙ্গে ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক তাপমাত্রায় ফ্রিজ বা ডিপ ফ্রিজে সংরক্ষণ করলে খাদ্যজনিত সমস্যা ও অসুস্থতা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন। সচেতনতা এবং সঠিক সংরক্ষণ কৌশল মেনে চললে মুরগির মাংস দীর্ঘ সময় পর্যন্ত নিরাপদ ও সুস্থভাবে খাওয়া সম্ভব।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, ফুড সেফটি
আরও পড়ুন:
পাউরুটি টাটকা ও নরম রাখার উপায়
সেদ্ধ ডিমের খোসা ছাড়ানোর ট্রিক
এসএকেওয়াই/জেআইএম