কোরবানির পর পশুর রক্ত ও বর্জ্য যেভাবে পরিষ্কার করবেন

আজ ঈদুল আজহা। ঈদের নামাজের পর থেকেই পশু কোরবানি দেওয়া শুরু হয়েছে। কোরবানি ঈদে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার বিষয় হলো পশু জবাইয়ের পর রক্ত ও বর্জ্য পরিষ্কার।
যদিও প্রতিবছর এ কাজ নিয়ে বড় ধরনের পরিকল্পনা থাকে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের। এবার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঢাকা শহরের কোরবানির বর্জ্য পরিষ্কার করা হবে বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন।
আরও পড়ুন: খাদ্যে বিষক্রিয়া এড়াতে মাংস যেভাবে সংরক্ষণ করবেন
তাই বলে নিজের দায়িত্ব অবহেলা করলে চলবে না। সবারই উচিত ময়লা আবর্জনা সঠিক স্থানে ফেলা ও নিজ বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা। অনেকে আছেন যারা কোরবানির পরে পশুর বর্জ্য যত্রতত্র ফেলে রাখেন।
ফলে ওই স্থানের আশপাশে দুর্গন্ধ ও রোগজীবাণু ছড়ায়। তাই সবারই উচিত যৌথভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় অংশ নেওয়া। কোরবানি হয়ে যাওয়ার পরে যে বর্জ্যগুলো তৈরি হবে সেগুলোতে সঙ্গে সঙ্গে ব্লিচিং পাউডার ও অন্যান্য পরিষ্কারক দ্রব্য ব্যবহার করে পরিষ্কার করা উচিত।
এছাড়া নির্দিষ্ট স্থানে রাখা উচিত বর্জ্যগুলো। এতে পরিচ্ছন্নকর্মীরা সহজেই তা অপসারণ করতে পারবেন। কীভাবে কোরবানির পর রক্ত ও বর্জ্য পরিষ্কার করবেন তা জেনে নিন-
আরও পড়ুন: ফ্রিজে মাংস কতদিন রাখা যাবে?
একসঙ্গে সবাই বর্জ্য পরিষ্কারের দায়িত্ব নিন
যারা নিজ বাড়িতে বা লনে কোরবানি করবেন, তাদেরকে অবশ্যই নিজ দায়িত্বে বর্জ্য পরিষ্কার করতে হবে। এককভাবে কোরবানি না করে, মহল্লা ভিত্তিক একটি নির্ধারিত স্থানে কোরবানি করা যেতে পারে। এতে নির্দিষ্ট এক স্থান থেকেই সম্মিলিতভাবে বর্জ্য অপসারণও সহজ হয়।
কোরবানির পর একই ভবনের বেশ কয়েকটি পরিবার একসঙ্গে মিলে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। এতে বর্জ্য অপসারণ দ্রুততর হয় বলে পরিবেশের ওপর তেমন প্রভাব পড়ে না।
পশুর গোবর ও উচ্ছিষ্ট আলাদা করুন আগেই
জবাইকৃত পশুর গোবর ও উচ্ছিষ্ট আলাদা করে কোনো পলিথিনে মুখবন্ধ অবস্থায় রাখুন। কখনো এগুলো খোলা রাখবেন না, তাহলে দ্রুত রোগজীবাণু ছড়াবে।
আরও পড়ুন: কিডনি ও উচ্চ রক্তচাপের রোগীরা ঈদে যা মেনে খাবেন
পশুর রক্ত জীবাণুনাশক পানি দিয়ে ধুয়ে দিন
পশু জবাইয়ের স্থানে কোরবানির পর পশুর রক্ত জীবাণুনাশক পানি দিয়ে ধুয়ে দিয়ে ব্লিচিং ছিটিয়ে দিন। এতে দুর্গন্ধ বা জমে থাকা পানিতে মশা ডিম পারতে পারবে না।
দ্রুত চামড়া বিক্রি করুন
কোরবানির পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব পশুর চামড়া বিক্রি কিংবা দান করতে হবে। না হলে গন্ধ ছড়াবে।
গর্তে ফেলুন আবর্জনা
কোরবানির আগেই নিকটবর্তী মাঠ কিংবা পরিত্যক্ত জায়গায় একটা গর্ত তৈরি করে রাখা উচিত। পশুর মলমূত্র, রক্ত, আবর্জনা যেখানে-সেখানে না ফেলে গর্ত করে মাটি চাপা দিতে হবে।
আরও পড়ুন: ঈদের রেসিপি: কাচ্চি বিরিয়ানি
কোরবানির শেষে পশুর মাংস রাখা পাটি পুড়িয়ে ফেলা উচিত। না হলে এখান থেকে পরে মশার উপদ্রব হতে পারে।
ঘরের ভেতরেও পরিষ্কার রাখবেন যেভাবে
বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখার পাশাপাশি এ সময় ঘরের ভেতরেও পরিষ্কার রাখতে হবে। মাংস ঘরে আনার পর তা কাটা ও বাছাইয়ের জন্য অনেকেই ডাইনিং রুম ব্যবহার করেন।
যে স্থানে মাংস কাটা হবে অবশ্যই সেখানে পলিথিন বিছিয়ে নিন। তার উপরে মাংস কাটা ও ভাগ করা হয়ে গেলে বেছানো শিট বা পাটি উঠিয়ে নিয়ে ওই জায়গা প্রথমে পানি দিয়ে ধুয়ে নিন। পরে গরম পানিতে ডিটারজেন্ট মিশিয়ে তা দিয়ে মেঝে পরিষ্কার করতে হবে।
সূত্র: বিবিসি
জেএমএস/এএসএম