ত্বকের শীতকালীন যত্নে সজনে তেল কেন উপকারী

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:২৮ পিএম, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫
এআই ছবি

আমাদের দেশে প্রাচীনকাল থেকেই সজনে ফুল, সজনে ডাঁটা খাবারের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে। একসময় গ্রামবাংলায় প্রায় প্রতিটি বাড়ির আঙিনাতেই সজনে গাছ দেখা যেত। নিত্যদিনের রান্নায় ব্যবহার হওয়া এই পরিচিত গাছটিই আজ নতুন পরিচয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনায়। সজনে গাছের পাতা, ফল ও ফুলের পুষ্টিগুণ নিয়ে গবেষণা শুরু হওয়ার পর থেকেই এর গুরুত্ব বহুগুণে বেড়েছে।

সজনে গাছ এমন একটি উদ্ভিদ, যার প্রায় প্রতিটি অংশই পুষ্টিগুণে ভরপুর। এতে রয়েছে ভিটামিন এ, ই ও সি, পাশাপাশি ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম এবং শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। শুধু খাবার হিসেবেই নয়, সজনে এখন রূপচর্চার জগতেও জায়গা করে নিয়েছে। সজনে বীজ থেকে তৈরি তেল বাজারে পাওয়া যায় মরিঙ্গা অয়েল নামে, যা শীতের সময় ত্বক ও চুলের যত্নে দারুণ কার্যকর উপাদান হিসেবে পরিচিত।

পুষ্টিবিদদের মতে, ভিটামিন এ ও সি-সমৃদ্ধ এই ভেষজে রয়েছে প্রচুর আয়রন, ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং জিঙ্কের মতো প্রয়োজনীয় খনিজ। পাশাপাশি এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান শরীরের নানা সমস্যায় সহায়ক ভূমিকা রাখে।

সজনে তেলে গুণাগুণ

১. ত্বকের জন্য সজনের তেল খুবই উপকারী। এতে থাকা ভিটামিন এ ও ই ত্বকের শুষ্কতা কমায়, ত্বককে নরম ও মসৃণ রাখে। নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের ফাটা ভাব, রুক্ষতা ও খসখসে ভাব ধীরে ধীরে কমে আসে। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট সমৃদ্ধ হওয়ায় এটি ত্বকের বয়সের ছাপ পড়তে দেরি করে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে।

২. সজনের তেলের আরেকটি বড় গুণ হলো এর অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য। ত্বকে চুলকানি, লালচে ভাব বা হালকা সংক্রমণ হলে এই তেল আরাম দিতে পারে। ব্রণপ্রবণ ত্বকের ক্ষেত্রেও এটি উপকারী, কারণ এটি ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

৩. চুলের যত্নেও সজনের তেলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ও জিঙ্ক চুলের গোড়া মজবুত করে, চুল পড়া কমাতে সহায়তা করে। শীতকালে মাথার ত্বক শুষ্ক হয়ে খুশকি দেখা দিলে হালকা গরম সজনের তেল স্ক্যাল্পে মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়। চুল হয় নরম, উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত।

ত্বকের শীতকালীন যত্নে সজনে তেল কেন উপকারী

ব্যবহারের আগে যা জানা জরুরি
মরিঙ্গা তেল উপকারী হলেও প্রথমবার ব্যবহারের আগে অবশ্যই প্যাচ টেস্ট করা উচিত। হাতের কোনো অংশে তেল মেখে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। জ্বালা বা চুলকানি না হলে মুখ ও শরীরে ব্যবহার করতে পারেন।

ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে অল্প মরিঙ্গা তেল লাগিয়ে তার ওপর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যায়। চাইলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়েও এই তেল ব্যবহার করা যেতে পারে।

এটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যচর্চা ও ত্বক-চুলের যত্নে এক বিশ্বজনীন ভেষজ উপাদান। শীতে প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বক ও চুল ভালো রাখতে চাইলে সজনের তেল হতে পারে নির্ভরযোগ্য সঙ্গী।

সূত্র: হেলথলাইন, টাইমস অব ইন্ডিয়া

আরও পড়ুন:
সতেজ থাকার রহস্য ফাঁস করলেন জ্যাকলিন
শীতকালে চুলে খুশকি বাড়ার আগেই নিন প্রতিরোধের ব্যবস্থা

এসএকেওয়াই/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।