মৃগী রোগীর যে কারণে পানি থেকে সাবধান থাকা উচিত

লাইফস্টাইল ডেস্ক
লাইফস্টাইল ডেস্ক লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:৫৪ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্প্রতি (১৯ সেপ্টেম্বর) সিঙ্গাপুরে স্কুবা ডাইভিং করার সময় শ্বাসকষ্টজনিত কারণে মৃত্যুবরণ করেন ভারতের জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী জুবিন গার্গ। তিনি একজন মৃগী রোগী ছিলেন। তাই অনেকেই বলছেন, পানিতে নামার ভৃল সিদ্ধান্তের কারণেই হয়তো আজ এই মর্মান্তিক পরিস্থিতি।

মৃগী বা এপিলেপসি হলো মস্তিষ্কের এক ধরনের দীর্ঘস্থায়ী স্নায়বিক রোগ, যেখানে রোগীর হঠাৎ খিঁচুনি বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। এই খিঁচুনি আসলে মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষে অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক সংকেত তৈরি হওয়ার কারণে ঘটে।

মৃগী রোগীদের জন্য পানি, বিশেষ করে সাঁতার, গোসল বা নদী–পুকুরে নামা অনেক সময় জীবনহানির ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। জেনে নিন কেন মৃগী রোগীর পানি নিয়ে বিশেষ ভাবে সতর্ক হওয়া উচিত-

মৃগী রোগীর যে কারণে পানি থেকে সাবধান থাকা উচিত

১. শ্বাসরোধ: মৃগী রোগীর হঠাৎ খিঁচুনি হলে শরীরের নিয়ন্ত্রণ একেবারে নষ্ট হয়ে যায়। যদি সেই সময় তিনি পানিতে থাকেন, তাহলে শ্বাসরোধ হয়ে ডুবে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, মৃগী রোগীদের মধ্যে অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনায় মৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো ডুবে যাওয়া। শুধু সাঁতার নয়, এমনকি বাথটাব বা বালতিতে গোসল করার সময়ও ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

২. মাথায় আঘাত: এপিলেপ্সিয়া জার্নালে ২০২০ সালে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, পানির সংস্পর্শে আসা মৃগী রোগীদের জন্য দ্বিগুণ ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ খিঁচুনির সময়ে মাথায় আঘাত লেগে আরও জটিল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও কিশোর মৃগী রোগীদের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার হার তুলনামূলক বেশি।

মৃগী রোগীর যে কারণে পানি থেকে সাবধান থাকা উচিত

৩. সংকোচ: বাংলাদেশসহ অনেক দেশে এখনো পরিবারগুলোতে মৃগীকে ঘিরে সচেতনতার অভাব রয়েছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এক যৌথ সমীক্ষায় দেখা গেছে, মৃগী রোগীরা সামাজিক লজ্জা বা সংকোচে ঝুঁকির কথা বলতেই চান না। ফলে তারা প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করেন না এবং দুর্ঘটনার শিকার হন।

তবে মৃগী রোগীর জন্য সবসময় পানি এড়িয়ে চলা একমাত্র সমাধান নয়। নিরাপদভাবে পানি ব্যবহারের কিছু নিয়ম আছে। যেমন, গোসল বা সাঁতার কাটতে হলে পাশে একজন অভিভাবক বা সঙ্গী থাকা, গভীর পানিতে না নামা, সাঁতারের সময় লাইফ জ্যাকেট ব্যবহার করা এবং কখনোই একা পানিতে না নামা।

অর্থাৎ, মৃগী রোগীদের জন্য পানি হলো এক গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকির ক্ষেত্র। সচেতনতা, পারিবারিক সহযোগিতা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে দুর্ঘটনার ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, এপিলেপ্সিয়া জার্নাল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ সমীক্ষা, ২০২২

এএমপি/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।