বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে বাধা ছিল: রাষ্ট্রদূত

কূটনৈতিক প্রতিবেদক কূটনৈতিক প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৮ পিএম, ২৯ জুলাই ২০২৫

বিগত ১০ বছর বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে বাধা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডিক্যাব) আয়োজিত ‘ডিক্যাব টক’ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

সম্প্রতি বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের চীন সফর সম্পর্কে জানতে চাইলে চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন চায়। তবে বিগত ১০ বছরে বিএনপি-জামায়াতের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে বাধা ছিল। এখন এই সম্পর্ক বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

এর আগে চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশ-চীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ভিত্তি হলো পারস্পরিক আস্থা, শ্রদ্ধা এবং সহযোগিতা।

চলতি বছরের মার্চ মাসে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস তার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফরের জন্য চীনকে বেছে নেন। বেইজিং সফরকালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে তার বৈঠক হয়, যেখানে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নের জন্য কৌশলগত দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করা হয়।

ইয়াও ওয়েন বলেন, দুই দেশ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পাঁচ নীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থেকে রাজনৈতিক আস্থা জোরদার, উন্নয়ন কৌশলের সমন্বয় এবং ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতা, অংশীদারত্ব এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে একমত হয়েছে।

সম্প্রতি চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও সিপিসি কেন্দ্রীয় কমিটির রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ওয়াং ই বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। এই বৈঠকে দুই পক্ষ একে অপরের মৌলিক স্বার্থে পারস্পরিক সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে, বহুমুখী ব্যবহারিক সহযোগিতা গভীর করার বিষয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধিদল সম্প্রতি চীন সফর করেছে এবং সে দেশে শাসনব্যবস্থা ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাজ করতে চায় চীন। এই ত্রিপক্ষীয় সহযোগিতার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা। এটি কোনোভাবেই তৃতীয় কোনো পক্ষবিরোধী জোট নয় বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানের ত্রিপক্ষীয় সম্পর্কের বিষয়টা স্বাভাবিক। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্ক আছে। এই তিন দেশ ১২টি খাতে আঞ্চলিক সহযোগিতা বাড়াতে সম্মত হয়েছে।

বাংলাদেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচন কখন হবে, সেটা বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে। আমি বিদেশি কূটনীতিক হিসেবে মন্তব্য করতে পারি না।

রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনি বলেন, তাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়াই একমাত্র টেকসই সমাধান। তবে মিয়ানমারের রাখাইনে বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের জন্য অনুকূল নয়। এ বিষয়ে চীন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমার-দুই দেশের সঙ্গেই নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে বলেও জানান তিনি।

জেপিআই/এসএনআর/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।