চট্টগ্রামে ২৮৬ প্রার্থীর ১৪৯ জনই আসামি


প্রকাশিত: ১১:০৫ এএম, ১৯ এপ্রিল ২০১৫

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি ২৮৬ জন মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ১৪৯ জনই মামলার আসামি। এর মধ্যে বর্তমানে মামলা রয়েছে ৬৩ জনের বিরুদ্ধে। অতীতে মামলা ছিল ৬৩ জনের। বর্তমান ও উভয় সময়ে মামলা রয়েছে ২৩ জনের নামে। এসব প্রার্থীর মধ্যে ৯ জনই হত্যা মামলা আসামি।

প্রার্থীদের মধ্যে ১০৭ জন অর্থাৎ ৩৭ শতাংশ প্রার্থী স্কুলের গণ্ডি পার হতে পারেননি। সম্প্রতি হলফনামা বিশ্লেষণ করে সংবাদ সম্মেলন ডেকে এমন তথ্য তুলে ধরেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

প্রার্থীদের লেখাপড়া : চট্টগ্রামে ২৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ১০৭ জন প্রার্থীর লেখাপড়া এসএসসি’র নিচে। ৪৯ জন এসএসসি এবং ৫৫ জন এইচএসসি পাশ করেছেন। ৪৪ জন স্নাতক এবং মাত্র ২৭ জন স্নাতকোত্তর পাস করেছেন। ৪ জন প্রার্থী হলফনামায় তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা উল্লেখ করেননি। ১২ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ১ জন এসএসসি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেননি। দু’জন এসএসসি, ৬ জন এইচএসসি, ১ জন স্নাতক এবং দু’জন স্নাতকোত্তর পাশ।

২১২ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৭৮ জন স্কুলের গণ্ডি পার হতে পারেননি। ৩৫ জন এসএসসি, ৪১ জন এইচএসসি, ৩৮ জন স্নাতক এবং ১৬ জন স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন। ৪ জন হলফনামায় শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা উল্লেখ করেননি।

সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের মধ্যে ২৮ জন স্কুল পার হননি। ১২ জন এসএসসি, ৮ জন এইচএসসি, ৫ জন স্নাতক এবং ৯ জন স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন।

ব্যবসায়ী প্রার্থী : প্রার্থীদের মধ্যে ১৮৮ জন অর্থাৎ ৬৫ দশমিক ৭৩ ভাগ ব্যবসায়ী। ১২ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ১০ জনের পেশাই ব্যবসা। বাকি দু’জনের একজন চাকরিজীবী, আরেকজন পেশার কথা হলফনামায় উল্লেখ করেননি। ২১২ জন কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ১৬৪ জন ব্যবসায়ী। ৬২ জন নারী কাউন্সিল প্রার্থীর মধ্যে ১৪ জন ব্যবসায়ী। সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলরদের মধ্যে আইনজীবী আছেন মাত্র ৫ জন। কৃষি পেশার সঙ্গে আছেন ১২ জন। নারী প্রার্থীদের মধ্যে ২৭ জন গৃহিণী।

মামলা আসামি : ২৮৬ জন মেয়র এবং কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ১৪৯ জনই মামলার আসামি। এর মধ্যে ১২ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে মাত্র দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা আছে। অতীতে মেয়র প্রার্থী সোলায়মান আলম শেঠ এবং আ জ ম নাছির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ৩০২ ধারায় হত্যা মামলা থাকলেও এখন নেই। ২১২ সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে ৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা আছে। ৫৪ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগে মামলা আছে। নারী কাউন্সিলর প্রার্থীদের মধ্যে ৭ জন বিভিন্ন মামলার আসামি।

কোটিপতি প্রার্থী : ১২ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে দু’জন বছরে কোটি টাকারও বেশি আয় করেন। এদের মধ্যে এম মনজুর আলম বছরে ২ কোটি ১০ লাখ ৬৫ হাজার ৫০৫ টাকা আয় করেন। আ জ ম নাছির আয় করেন তিন কোটি ৬২ লাখ ৩২ হাজার ৭৪৪টাকা। বাকি মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে দু’জনের আয় বছরে দুই লাখ টাকা। তিন জন দুই লাখ টাকা থেকে পাঁচ লাখ টাকার মধ্যে এবং বাকি চারজন ৫ লাখ থেকে ২৫ লাখ টাকার মধ্যে আয় করেন। ১২ জন মেয়র প্রার্থীর মধ্যে সম্পদ হিসেব করলে এম মনজুর আলম ও আ জ ম নাছির উদ্দিনসহ কোটিপতি আছেন ৫ জন। ২১২ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ১৫ জন কোটিপতি। তিনজনের আয় এক কোটি টাকার মধ্যে। দু’জনের আয় এক কোটিরও উপরে। নারী কাউন্সিলরদের মধ্যে কেউ কোটিপতি নেই। প্রতিদ্বন্দ্বি ১৮৮ জন প্রার্থীই (৬৫.৭৩) শতাংশ ব্যাসায়ী।

প্রার্থীদের ঋণ : ২৮৬ জন প্রার্থীর মধ্যে ৬ জনের কোটি টাকার উপরে ঋণ আছে। মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলমের ৪ কোটি ৭০ লাখ ৬ হাজার ১৯৮ টাকা ঋণ আছে। তার নিজস্ব ঋণ এক কোটি ২২ লাখ টাকা। আ জ ম নাছির উদ্দিনের ৮ কোটি ৬৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭২৪ টাকা ঋণ আছে। চট্টগ্রামের মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে ১০ জন করদাতা। পাঁচজন মেয়র প্রার্থী লক্ষাধিক টাকা কর দেন। মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলম বছরে ৬৫ লাখ ২৩ হাজার ৫৯৪ টাকা কর দেন। ৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ১০ লাখ টাকার উপরে কর প্রদান করেন।

তথ্য প্রকাশ শেষে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, আমি নিশ্চিত তিনটি সিটি কর্পোরেশনে যারা মেয়র নির্বাচিত হবেন তারা ব্যবসায়ী। কাউন্সিলর যারা হবেন তাদের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীরা নির্বাচিত হোক, সমস্যা নেই। কিন্তু সবাই যদি ব্যবসায়ী হন, তাহলে তো কর্পোরেশন ব্যবসাবান্ধব হয়ে যাবে।

এমএএস/আরআই

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।