ইসির গলার কাঁটা ইভিএম


প্রকাশিত: ০২:৩৪ এএম, ২০ মে ২০১৫

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নির্বাচন কমিশনের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইভিএম নিয়ে বেকায়দায় পড়েছে নির্বাচন কমিশন ( ইসি)। তিন সিটি কর্পোরেশনের বিতর্কিত নির্বাচনের পর আগামীতে ইভিএম ব্যবহারের পরমর্শ এলেও সাহস পাচ্ছে না ইসি। এমনকি ইভিএম ব্যবহারে চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ তোলায় বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে সাংবিধানিক সংস্থাটি।

ইসির একাধিক সূত্র জানায়, ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন, ২০১২ সালে নরসিংদী পৌরসভা ও ২০১৩ সালে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে একটি করে ইভিএম কন্ট্রোল ইউনিটে ক্রটি দেখা দিলে ভোটগ্রহণে জটিলতা তৈরি হয়। এই ক্রটি সারানোর জন্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়কে (বুয়েট) চিঠি দেয় ইসি। ইভিএমগুলো বুয়েটের ব্যুরো অফ রিসার্চ,  টেস্টিং অ্যান্ড কনসালটেশন (বিআরটিসি) পরিচালকের কাছে পাঠিয়ে ক্রটি চিহ্নিত করতে গতবছর অনুরোধ জানায় ইসি।

কিন্তু বুয়েট থেকে নেওয়া ওইসব ইভিএম মেশিন চুক্তি অনুযায়ী ব্যবহার করা হয়নি বলে জানানো হয়। ক্রটি সারানো হবে না বলেও তারা সরাসরি জানিয়ে দেয় ইসিকে।

এসব ইভিএমে নিয়ম না মেনে দেশীয় ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে জানিয়ে কোনো সমাধান ছাড়াই গত মার্চে ইভিএমগুলো কমিশনকে ফেরত দেয় বুয়েট। চিঠিতে বুয়েটের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইভিএমের পাওয়ার সাপ্লাইয়ের জন্য দেশীয় বা লোকাল ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়েছে, যা দ্বিপক্ষীয় চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই এ কন্ট্রোল ইউনিট সঠিকভাবে কাজ না করার কারণ চিহ্নিত করার বিষয়টি চুক্তির বাইরে চলে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার  মো. শাহ নেওয়াজ জাগো নিউজকে বলেন, যে প্রতিষ্ঠান ইভিএম সরবরাহ করেছে তাদের ক্রটি সারিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। তাই আগামীতে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে আরো চিন্তা-ভাবনা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।  নির্বাচন কমিশন সচিব সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, চুক্তি লঙ্ঘনের মতো কোনো ঘটনা  ঘটেনি।

সূত্র আরো জানায়, গত ৭ মে নির্বাচন কমিশনের মেইনটেন্যান্স ইঞ্জিনিয়ার মো. ইকবাল জাভীদ বিআরটিসি পরিচালককে ফের চিঠি দিয়ে ইভিএমের কারিগরি ত্রুটি পরীক্ষা করে একটি ‘স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিবেদন’ পাঠানোর অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে ‘চুক্তি লঙ্ঘনের’ অভিযোগের ব্যাখ্যাও দেন তিনি।

চিঠিতে বলা হয়, ইভিএম ফেরত পাঠানোয় নির্বাচন কমিশন বিব্রত অবস্থায় পড়েছে। রাজশাহীতে ব্যবহৃত কন্ট্রোল ইউনিটে কখনোই দেশীয় ব্যাটারি ব্যবহার করা হয়নি। এখানে কীভাবে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি লঙ্ঘন হয়েছে তা বোধগম্য নয়।

জানা যায়, গতমাসে তিন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা হওয়ায় দেশ বিদেশ থেকে চাপ আসে ইসিতে। অনেকেই তাদেরকে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট নেওয়ার পরামর্শ দেন। এ নিয়ে ইসিতে কয়েক দফা বৈঠক হয়। কিন্তু বুয়েটের এ ধরনের আচরণে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করা হয় বৈঠকে।

এইচএস/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।