মানবাধিকার পরিস্থিতি উন্নয়নে সবাইকে কাজ করার আহ্বান

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৩ পিএম, ১৬ জুলাই ২০১৭

আদিবাসীসহ দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। এর জন্য সরকারকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। বাংলাদেশের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুরা ভালো নেই। তবে আমাদের হাল ছাড়লে হবে না। অনবরত কথা বলে যেতে হবে, দাবি জানাতে হবে।

রোববার রাজধানীতে একটি ইংরেজি দৈনিকের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউ (ইউপিআর) ও বাংলাদেশের আদিবাসীদের অধিকার শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ৩০টি আদিবাসী সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত ইউপিআর কোয়ালিশন এই আলোচনার আয়োজন করে।

জাতীয় আদিবাসী পরিষদের সভাপতি ও কাপেং ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন রবীন্দ্রনাথ সরেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য প্রফেসর বাঞ্চিতা চাকমা, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং, ব্লাস্টের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কোয়ালিশনের সদস্য সংগঠন আদিবাসী ক্লাস্টার ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সভাপতি অজয় এ মৃ। আলোচনার মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউপিআর কোয়ালিশনের অন্যতম সদস্য সংগঠন কাপেং ফাউন্ডেশনের প্রজেক্ট কোঅর্ডিনেটর বাবলু চাকমা।

আলোচনায় প্রফেসর বাঞ্চিতা চাকমা বলেন, আদিবাসী শিশুদের প্রাক-প্রাথমিক মাতৃভাষার বই এ বছর বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু এই বইগুলো পড়ানোর জন্য শিক্ষকদের যে প্রশিক্ষণ দেয়ার প্রয়োজনীয়তা ছিল তা করা হয়নি। ফলে এই উদ্যোগের ফলাফল নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি লংগদুতে আদিবাসীদের ঘর-বাড়িতে হামলা, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমি গিয়েছিলাম ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসীদের দেখতে। খুবই ভয়াবহ অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এটা নিঃসন্দেহে আদিবাসীদের মানবাধিকার লঙ্ঘন। আগামীতে আদিবাসীসহ দেশের সার্বিক মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। সরকারকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

সঞ্জীব দ্রং বলেন, ২০১৩ সালে বাংলাদেশের ইউপিআরের চক্রে ৩৯ জন প্রতিনিধি বাংলাদেশ থেকে অংশ নেয়। এ সময় সরকারের প্রতিনিধিরা পার্বত্য চুক্তির ৪৮টি ধারা বাস্তবায়নের কথা বলেন। আসলে কি তাই? এটা বুঝতে আমাদের বাকি নেই যে তারা চালাকি করে উত্তর দেয়। তারা আমাদের বোকা মনে করে। কারণ তাদের হাতে ক্ষমতা। তবে অতি চালাকের বিপদ আসন্ন।

তিনি আরও বলেন, যেকোনো দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি বিচার্য হবে সেখানকার সংখ্যালঘুরা কেমন আছে তার ওপর। নিঃসন্দেহে বলা যায় বাংলাদেশের আদিবাসী ও সংখ্যালঘুরা ভালো নেই। তবে আমাদের হাল ছাড়লে হবে না। অনবরত কথা বলে যেতে হবে, দাবি জানাতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে রবীন্দ্রনাথ সরেন বলেন, রাষ্ট্র শুধু আদিবাসী নয়, এদেশের সাধারণ গরিব মানুষদের প্রতি যে অন্যায়গুলো করে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমরা প্রতিনিয়ত কথা বললেও সরকার কর্ণপাত করছে না। আদিবাসীদের মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ইউপিআরের মতো যেসব ব্যবস্থাগুলো আছে সেগুলোতে অনবরত আদিবাসীদের অংশগ্রহণ বৃদ্ধিসহ দেশীয় পরিসরে বড় ধরনের লড়াই সংগ্রাম করতে হবে।

এছাড়াও মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন থোওায়ং মারমা, ইউজিন নকরেক, এন্ড্রু সলোমার, নমিতা চাকমা, সুভাষ চন্দ্র হেমব্রম, মাহবুবুল হক, পার্থ শংকর সাহা, সোহেল হাজং, হরেন্দ্রনাথ সিং প্রমুখ।

এমএ/বিএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।