তাজিয়া মিছিলের ঘোড়াকে পথে পথে দুধে গোসল-শ্রদ্ধা

মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল
মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল মনিরুজ্জামান উজ্জ্বল , বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:১৯ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯

ধবধবে সাদা, টগবগে তাগড়া ঘোড়া। রাজকীয় কারুকার্যখচিত ঝলমলে পোশাক সারা দেহে। খট খট শব্দ তুলে রাজপথে রাজার মতো হেলেদুলে হেঁটে যাচ্ছিল। ঘোড়াটির সামনে পেছনে হাজার হাজার নারী, পুরুষ ও শিশুদের বিশাল বহর।

পবিত্র মহররহম উপলক্ষে মঙ্গলবার দুপুর আনুমানিক সোয়া ১টায় রাজধানীর চানখারপুলের হোসেনী দালানের ইমামবাড়া থেকে বের হওয়া তাজিয়া মিছিলে অংশ নেয় এটিসহ একাধিক ঘোড়া।

ঐতিহাসিক কারবালার প্রান্তরে হযরত মুহাম্মদ (স.) এর দৌহিত্র ইমাম হাসান ও হোসেনের ঘোড়ার অনুকরণে এ ঘোড়াগুলোকে সাজানো হয়। ঘোড়াগুলোকে পথে পথে সামান্য কিছু সময়ের জন্য বিশ্রাম দিতে দেখা যায়।

horse-1

ঘোড়া একটু থামলেই দুধ ভর্তি ছোট-বড় গ্যালন ও বোতল হাতে আবালবৃদ্ধবনিতাকে ছুটে আসতে দেখা যায়। পরম ভক্তি ভরে তারা ঘোড়াটির গায়ে দুধ ঢেলে দেয়। এরপর পরম মমতায় ও শ্রদ্ধাভরে ঘোড়াটির দেহে লেগে থাকা দুধ মুখে মেখে ও মাথায় মুছে সবাইকে পরম তৃপ্ত হতে দেখা যায়।

horse-1

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা ষাটোর্ধ্ব সাহাদাত হোসেনকে বেলা সাড়ে ১১টায় ইডেন কলেজের সামনে একটি দুধের প্যাকেট হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, প্রতি বছর ১০ মহরমের দিন তিনি মিছিলে অংশগ্রহণ নেয়া ঘোড়ার জন্য অপেক্ষা করেন। ঘোড়া আসলে অনুমতিসাপেক্ষে (মিছিল চলাকালে ঘোড়ার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত তরুণদের কাছ থেকে) তার গায়ে দুধ ঢালেন। এতে মানসিক তৃপ্তি পান বলে মন্তব্য করেন সাহাদাত হোসেন।

বকশিবাজাররে বাসিন্দা মধ্যবয়সী রেহানা বেগম হোসেনী দালান থেকে পায়ে হেঁটে নিউমার্কেট পর্যন্ত আসেন। এ সময় ঘোড়ার গায়ে দুধ ঢালতে এগিয়ে যান তিনি। ঘোড়ার গায়ে লেপ্টে থাকা দুধে পরম শ্রদ্ধা ভরে হাত বুলিয়ে মাথায় মুছতে দেখা যায়।

horse-1

এ প্রতিবেদক কারণ জানতে চাইলে রেহানা বেগম বলেন, এ ঘোড়াকে ইমাম হাসান ও হোসেনের পবিত্র ঘোড়া বলে মনে করেন তিনি। ঘোড়ার গায়ের স্পর্শ শরীরে লাগালে সকল বিপদ-আপদ থেকে মুক্ত থাকা যায় বলে জানান তিনি।

এমইউ/এমএসএইচ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।