করোনা আতঙ্ক : হাতে আবেদন-টাকা জমা নিচ্ছে না বাংলাদেশ হাইকমিশন

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩৮ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২০

করোনাভাইরাস আতঙ্কে রয়েছে পুরো বিশ্ব। ঘাতক এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে প্রায় সব দেশ। বিশেষ করে যেসব দেশে ইতোমধ্যে এই ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি পাওয়া গেছে সেসব দেশ আরও বেশি মাত্রায় সতর্কতা অবলম্বন করছে। মানবদেহ থেকে এ রোগের সংক্রমণ হয় বলে নেয়া হচ্ছে বাড়তি সতর্কতা।

এরই ধারাবাহিকতায় সত্যায়িত করার জন্য কাগজপত্র সরাসরি হাতে জমা না দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন। এমনকি এসব কার্যক্রমের ফিও ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে বলা হয়েছে।

দেশটিতে করনোভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে স্বাস্থ্যগত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে এক জরুরি নোটিশে হাইকমিশনের পক্ষ থেকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দেয়া ওই নোটিশে বলা হয়েছে, করনোভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে স্বাস্থ্যগত বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সত্যায়নের জন্য আইপিএ বা কেবল কর্মচারীর অনুলিপির দ্বিতীয় পৃষ্ঠার কপি সরাসরি জমা না দিতে অনুরোধ করা হচ্ছে। এর পরিবর্তে সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ হাই কমিশনের ইমেইলের মাধ্যমে ([email protected]) এসব কাগজ পাঠাতে বলা হয়েছে।

হাইকমিশন জানায়, এ ক্ষেত্রে আইপিএ সত্যায়িত করার ফি বাবদ অর্থও (১২ সিঙ্গাপুর ডলার) হাইকমিশনের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা দিতে হবে। বাংলাদেশ হাইকমিশনের অ্যাকাউন্ট নম্বরটি হলো- ০১-০-৮৩৯৩৪৫৬-৫, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক।

নির্ধারিত ফি জমা দেয়ার পর পাওয়া রশিদ ও আইপিএর সংশ্লিষ্ট পাতার স্ক্যান কপি হাইকমিশনের ইমেইল পাঠাতে বলা হয়েছে। হাইকমিশনও সত্যায়িত কপি একইভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে পাঠিয়ে দেবে বলে জানানো হয়।

পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত এই কার্যক্রম বলবত থাকবে বলে জানিয়েছে সিঙ্গাপুরের বাংলাদেশ হাইকমিশন।

উল্লেখ্য, সিঙ্গাপুরে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত একজন বাংলাদেশি শনাক্ত হয়েছেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি তার শরীরে করোনাভাইরাসের উপসর্গ পাওয়া যায়। পরে ৩ ফেব্রুয়ারি তাকে সিঙ্গাপুরের জিপি ক্লিনিকে পাঠানো হয়। এর দুদিন পর ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশি এই প্রবাসীকে চাঙ্গি জেনারেল হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরে তাকে বেডোক পলি ক্লিনিকে পাঠানো হয়। শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকালে ওই বাংলাদেশি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বলে নিশ্চিত করেন চিকিৎসকরা। পরে তাকে আইসোলেশন ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়।

সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশ হাইকমিশন জানিয়েছে, আক্রান্ত বাংলাদেশির আট রুমমেটকে কোয়ারেন্টাইনে (পৃথক স্থানে) রেখেছে দেশটির সরকার। অন্যদিকে আক্রান্ত সেই বাংলাদেশির (৩৯) চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছে সিঙ্গাপুর সরকার। তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ খবরও রাখছে সেখানে থাকা বাংলাদেশ হাইকমিশন। এ জন্য সিঙ্গাপুরের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছে হাইকমিশন।

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে এখন পর্যন্ত সে দেশেই মৃত্যু হয়েছে ৯০৮ জনের। এছাড়া ফিলিপাইন ও হংকংয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও দুজনের। অর্থাৎ সবমিলিয়ে সোমবার পর্যন্ত এই ভাইরাস কেড়ে নিয়েছে ৯১০ জনের প্রাণ। এ ভাইরাসে বিশ্বজুড়ে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ।

চীনের বাইরে ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, জাপান, সিঙ্গাপুরসহ আরও ২৭টি অঞ্চল বা দেশে ছড়িয়েছে করোনাভাইরাস। এক্ষেত্রে চীনের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা সিঙ্গাপুরে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত অন্তত ৪৩ জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে।

জেপি/এফআর/এমকেএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।