‘রাতে সুনসান নীরবতায় বের হতেও ভয় লাগে’

বিশেষ সংবাদদাতা
বিশেষ সংবাদদাতা বিশেষ সংবাদদাতা
প্রকাশিত: ০৫:৫০ পিএম, ১৬ মে ২০২০

রাজধানীর নিউমার্কেট থানা সংলগ্ন চৌরাস্তার চত্বরের অদূরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ গেটের সামনে শুয়ে বিশ্রাম নিচ্ছে একটি নয় দুটি নয়, আট আটটি কুকুর। করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশপথে মাস দুয়েক আগেই বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে আটকে দেয়া হয়েছে। যদিও উপর দিয়ে সামনে যতদূর চোখ যায় রাস্তাঘাট একেবারেই ফাঁকা।

ব্যারিকেডের অদূরে বিশ্ববিদ্যালয় স্টাফ কোয়ার্টার থেকে এক ব্যক্তিকে সাইকেল নিয়ে বের হতে দেখা যায়। এ সময় রাস্তায় এতগুলো কুকুরকে একসঙ্গে দেখে কিছুটা ভয়ার্ত দৃষ্টিতে এদিক-ওদিক তাকিয়ে সাইকেলে প্যাডেল চালান তিনি। যান্ত্রিক নগরীতে এ দৃশ্য একেবারেই বেমানান।

সন্ধ্যা শেষে রাত শুরু হয়েছে মাত্র। কিন্তু করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে রাত ৮টার পর অত্যাবশ্যক প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়ার ওপর স্বাস্থ্য অধিদফতরের নির্দেশনা থাকায় বিভিন্ন রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়ে। চারদিকে সুনসান নীরবতা বিরাজ করে।

যে স্থানটির বর্ণনা দেয়া হচ্ছে সে স্থানটিতে স্বাভাবিক সময়ে বিশেষ করে রমজান মাসে সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ঈদের কেনাকাটার জন্য জন ও যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বর্তমান দৃশ্যপট একেবারেই ভিন্ন।

dog

শুক্রবার (১৫ মে) জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের চোখে রাস্তাজুড়ে দখল করে থাকা আটটি কুকুর ও একজন মানুষের উপস্থিতির দৃশ্য চোখে পড়ে।

এ দৃশ্য শুধু নীলক্ষেতে নয়, রাতের ঢাকার বিভিন্ন সড়কে এখন মানুষজনের উপস্থিতি খুবই কম। খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হন রাতের নীরবতায় তারাও ভীত থাকেন।

এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে নিউমার্কেটের একজন ব্যবসায়ী জানান, বিভিন্ন অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি গত দেড় মাস বাসা থেকেই রাস্তায় বের হননি। বর্তমানে রাতের সুনসান নীরবতায় বের হতেও ভয় লাগে। একদিন সন্ধ্যার পর বেরিয়ে তিনি রাস্তাঘাটের সুনসান নীরবতা দেখে ভয় পেয়ে যান। তার মনে পড়ে যায় ষাটের দশকের ঢাকার কথা। একসময় নিউমার্কেট আজিমপুর এলাকায় রাস্তায় হেঁটে গেলে শিয়ালের ডাক শোনা যেত। তখন সন্ধ্যার পর লণ্ঠন জ্বালানো হতো।

অদৃশ্য করোনাভাইরাসের ভয়ে রাতের বেলায় লোকজন ঘরের বাইরে বের না হওয়ায় তিনি এমনই এক পরিবেশের প্রতিচ্ছবি অনুভব করেছেন বলে জানান।

রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে রাতের বেলায় এখন অসংখ্য কুকুর শুয়ে ও বসে থাকতে দেখা যায়। আগে রাস্তাঘাটে উচ্ছিষ্ট খেয়ে দিন কাটালেও এখন মার্কেট বন্ধ থাকায় কুকুরগুলো চাহিদা মোতাবেক খাবার পাচ্ছে না। কেউ কেউ ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাবার সরবরাহ করেন।

এমইউ/বিএ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।