যুক্তরাজ্যে ছড়ানো করোনা আর বাংলাদেশের করোনা আলাদা: ড. বিজন

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১২:৫৩ পিএম, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০
ছবি : সংগৃহীত

অডিও শুনুন

যুক্তরাজ্যে করোনার নতুন প্রজাতি শনাক্ত হয়েছে, যা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে, শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। সম্প্রতি দেশের বাংলাদেশ বিজ্ঞান এবং শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর) জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যের নতুন প্রজাতির সঙ্গে বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়া নতুন প্রজাতির মিল রয়েছে। এতে বাংলাদেশেও কিছুটা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশে শনাক্ত হওয়া করোনার নতুন প্রজাতি আলাদা। বাংলাদেশেরটা করোনার নতুন প্রজাতি। যুক্তরাজ্যে শনাক্ত ও বাংলাদেশে শনাক্ত নতুন প্রজাতির করোনার মিউটেশন হয়েছে এক জায়গায়।

রোববার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে জাগো নিউজকে এসব তথ্য জানান আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন অণুজীব বিজ্ঞানী, সার্স ভাইরাসের কিট উদ্ভাবক ও করোনাভাইরাস শনাক্তের ‘জি র‌্যাপিড ডট ব্লট’ কিটের উদ্ভাবক ড. বিজন কুমার শীল।

তিনি বলেন, যুক্তরাজ্যের করোনার নতুন প্রজাতি শনাক্তের জন্য যে পিসিআর কিট ব্যবহার করা হয়, তা বাংলাদেশে নেই। সরকারকে উদ্যোগ নিয়ে সেই কিট আমদানি করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

ড. বিজন কুমার শীল জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার মনে হয়, যুক্তরাজ্যে করোনার যে স্ট্রেনটা আসছে, সেটা বাংলাদেশ এখনও শনাক্ত করতে পারেনি। যেটা বলছে তারা, সেটা অ্যাকচুয়ালি ব্রিটেনের স্ট্রেন নয় বা বি১১৭ নয়। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে মিউট্রেশন হয়েছে পি-৬৮১ প্লেসে। কিন্তু ব্রিটেনের মিউট্রেশনের আউটকামের সঙ্গে বাংলাদেশের আউটকাম এক নয়, ভিন্ন। মিউট্রেশন এক জায়গায়ই হয়েছে। ওই জায়গায় একটা সিড মিস বা পরিবর্তন হয়েছে। সেই পরিবর্তনটা ব্রিটিশদের সাথে এক না। সেটা আমাদের নিজস্ব একটা মিউটেশন। পয়েন্ট মিউটেশন একটা জায়গায় হয়েছে কিন্তু মিউটেশনের পরের আউটকাশে ব্রিটিশের সঙ্গে মিল নেই।’

তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় কথা হলো এটা ধরার জন্য যে পিসিআর টেস্ট দরকার, সেটা বাংলাদেশে ব্যবহার করা হয় না। যুক্তরাজ্যের পিসিআরে আছে এন, ওয়ারেড ও এস। দেখা গেছে, অনেক রোগী দুটি পজিটিভ হচ্ছে কিন্তু এস নেগেটিভ। তখন তাদের সন্দেহ হয়েছিল। তখন তারা স্যাম্পল টেস্ট করে দেখেছে, ৯০ শতাংশ রোগীর মধ্যে এস নেগেটিভ পাওয়া যাচ্ছে না। তখন কিন্তু বিষয়টা তাদের নজরে এসেছে। তখন তারা ভালো করে খুঁজে দেখে যে, এস জিন যেগুলোর মধ্যে নেই সেগুলোই বেশি ছড়াচ্ছে। যেগুলোতে এস জিন আছে সেগুলো কম ছড়াচ্ছে। তখনই কিন্তু বিষয়টা আলোচনায় এসেছে। সবচেয়ে বড় কথা যে টেস্ট কিটটা ব্রিটেনে ব্যবহার করা হচ্ছে, সেটা বাংলাদেশে আনা উচিত। এ জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। হয়তো ভবিষ্যতে ব্রিটিশ টাইপ আসতে পারে। যেহেতু ব্রিটেন থেকে বাংলাদেশে মানুষ আসছে।’ এক্ষেত্রে সরকারকে সজাগ থাকতে হবে বলেও উল্লেখ করেন ড. বিজন।

ড. বিজন বলেন, ‘আমাদের দেশের মানুষের সাথে ব্রিটিনের মানুষের পার্থক্য আছে। পশ্চিমা মানুষের সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের সামগ্রিক বায়োলজির যে পার্থক্য, সেটা আমরা বুঝতে পারছি। আমাদের মধ্যে কিছুটা রেজিলেন্স (করোনা সহনশীলতা) বেশি। কারণ করোনায় ইউরোপে প্রচুর মানুষ মারা গেল, আমাদের দেশে অত মানুষ মরেনি। সেদিক থেকে মনে হয়, ভয়ের কারণ নেই। তবু সাবধানে থাকা উচিত। সেক্ষেত্রে মাস্কের ব্যবহারটা বাধ্যতামূলক করতে হবে। ভ্যাকসিনের চেয়ে মাস্কের মূল্য (গুরুত্ব) বেশি এই মুহূর্তে। মাস্কের ব্যবহার অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।’

পিডি/ইএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।