বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সংহতি জোরদারের আহ্বান প্রতিমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৪:০৯ পিএম, ১৫ জুলাই ২০২২
বক্তৃতা করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম

চলমান বহুমুখী বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী সংহতি জোরদার এবং সুসমন্বিত সাড়াদান প্রক্রিয়া গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গ্লোবাল ক্রাইসিস রেসপন্স গ্রুপের চ্যাম্পিয়নদের একজন হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংকটের ধরণ, মাত্রা ও প্রভাবের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বৈশ্বিক সাড়াদান ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে বিশ্ব নেতাদের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন।’

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম (এইচএলপিএফ) ২০২২ উপলক্ষে আয়োজিত ‘২০৩০ সালের মধ্যে এসডিজির অর্জন ত্বরান্বিত করা: চলমান সংকট মোকাবিলা এবং চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ওঠা’ শীর্ষক মন্ত্রীপর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।

বৈঠকে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ও সংশ্লিষ্ট উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

শুক্রবার (১৫ জুলাই) জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।

বৈঠকে মহামারি করোনাভাইরাস, জলবায়ু পরিবর্তন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো বহুবিধ এবং ওভারল্যাপিং সংকটের প্রভাবের পাশাপাশি অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের প্রভাব তুলে ধরেন প্রতিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেও যে ঘুরে দাঁড়ানো যায়, তা বাংলাদেশ দেখাতে সক্ষম হয়েছে। আমরা আমাদের অর্থনীতিকে সচল রাখতে ২২ বিলিয়ন ডলারের প্রণোদনা দিয়েছি। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত করেছি। এছাড়া আমরা ভ্যাকসিনের জন্য বিলিয়ন ডলার খরচ করেছি।’

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের সমগ্র সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি, জাতীয় তথ্য ভান্ডার, এসডিজি ট্র্যাকার এবং স্থানীয়করণের প্রচেষ্টাসমূহ এসডিজি বাস্তবায়নকে ত্বরান্বিত করার পথ তৈরি করেছে।’

বাংলাদেশ গৃহীত উদ্ভাবনী, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং জনকেন্দ্রিক অভিযোজন কৌশলের ওপর আলোচনা করে প্রতিমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী সংহতি ও অংশীদারিত্বের প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দেন। বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘দুর্যোগ ঝুঁকি মোকাবিলা ও সংকট ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ আজ রোল মডেলে পরিণত হয়েছি।’

প্রতিমন্ত্রী জাতিসংঘের নেতৃস্থানীয় সংস্থা, উন্নয়ন অংশীদার, বহুপাক্ষিক দাতা এবং বেসরকারি খাতকে সদস্য দেশসমূহের জাতীয় প্রচেষ্টাকে সমর্থন যোগানো, বিশেষ করে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানান, যাতে তারা টেকসই, ঘুরে দাঁড়াতে সক্ষম ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় ফিরতে পারে।

এর আগে ইরাকের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী খালিদ নাজিম, অ্যান্ডোরার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিজ মারিয়া উবাচ আই ফন্ট, ডোমিনিকার পরিকল্পনা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন, জলবায়ু স্থিতিস্থাপকতা, টেকসই উন্নয়ন এবং নবায়নযোগ্য শক্তিবিষয়ক মন্ত্রী ড. ভিন্স হেন্ডারসন, দক্ষিণ আফ্রিকার পরিকল্পনা, পর্যবেক্ষণ ও মূল্যায়ন বিষয়ক মন্ত্রী মন্ডলি গুঙ্গুবেলে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ফেডারেল মন্ত্রী মিজ ক্যারোলিন, জাতিসংঘে নিযুক্ত টোঙ্গার স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত ভিলিয়ামি ভাইঙ্গা টোন এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত টুভালুর স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত স্যামুয়েলু লালোনিউয়ের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী।

এসব বৈঠকে তিনি ২০২২-২৩ মেয়াদে মানবাধিকার কাউন্সিল নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রার্থিতাসহ পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

এছাড়া শনিবার (১৬ জুলাই) বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে ভেনিজুয়েলার বহুপাক্ষিকবিষয়ক উপমন্ত্রী এবং কাজাখস্তানের জাতীয় অর্থনীতিবিষয়ক মন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জাতিসংঘ সদরদপ্তরে চলমান উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ফোরাম (এইচএলপিএফ) ২০২২-এ বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

এএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।