দখলদারদের রক্ষার অভিযোগ নদী কমিশন চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:১৯ এএম, ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
মনজুর আহমেদ চৌধুরী (বামে) ও মুজিবর রহমান হাওলাদার

জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে নদী দখলদারদের পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বলা হচ্ছে, ড. মনজুরের আত্মীয়স্বজন এবং যারা তাকে এ পদে বসিয়েছেন সবাই নদী দখলদার। এই দখলদারদের আড়াল করতে চান তিনি। আর এ কারণেই জেলা প্রশাসকদের মাধ্যমে তৈরি নদী দখলদারদের তালিকা সংশোধন বা বাতিল করা হচ্ছে। 

গত রোববার (৩০ জানুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ আয়োজিত এক কর্মশালায় দেওয়া বক্তব্যে এমন অভিযোগ তোলেন নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মুজিবর রহমান হাওলাদার। তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মনজুর আহমেদ চৌধুরী।

মুজিবর রহমান হাওলাদার বলেন, কমিশন থেকে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে এবং দেশের আইন মেনে দখলদারদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু চেয়ারম্যান ওই তালিকা প্রকাশ না করে পুনর্মূল্যায়নের নামে তালিকা থেকে অনেক দখলদারের নাম বাতিল করতে চান। দখলদারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার জন্য আর্থিক সুবিধা নেওয়ার কথাও আমরা শুনতে পাচ্ছি।

আরও পড়ুন: নদী রক্ষা কমিশনের নতুন চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী

তিনি বলেন, সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী আমাকে একদিন বললেন, ‘আপনার মাঠপর্যায়ে গিয়ে তালিকা করার দরকার নেই। ঢাকায় বসে কাজ করলেই চলবে।’ কিন্তু আমি ওই মন্ত্রীর এলাকায় গিয়ে দেখি তার বাবার আমল থেকে দুটি শিল্পকারখানা নদী দখল করে চালানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, অনেক সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান ও প্রভাবশালী নেতা নদী দখল করে আছেন। তাদের নাম বাদ দিতে বর্তমান চেয়ারম্যান দখলদারদের তালিকা সংশোধন করছেন।

নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান বলেন, দেশে নদী যে দখল ও দূষণের শিকার হচ্ছে, তা বুঝতে বিজ্ঞান ও গবেষণার দরকার হয় না। নদীর পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেও বোঝা যায়। নদী রক্ষা কমিশনের কাজ ছিল এরই মধ্যে চিহ্নিত হওয়া দখলদারদের উচ্ছেদে উদ্যোগ নেওয়া। যাদের নদী দখলদারদের তালিকা যাচাই–বাছাই করার দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তাদের সম্পদের হিসাব নিলে ওই তালিকা সংশোধনের আসল কারণ বেরিয়ে আসবে।

ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী নিয়োগপত্রের শর্তও রাখেননি অভিযোগ করে তিনি বলেন, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন আইন ২০১৩ এর ধারা ৫(২) এবং একই আইনের ধারা ৫(৩) অনুযায়ী ড. মনজুরকে অন্যান্য প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে কর্মসম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনি সেই শর্ত ভঙ্গ করে নদী দখল করে আত্মীয়-স্বজনের মাধ্যমে পরিচালিত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন।

মুজিবর রহমান হাওলাদার বলেন, অন্যদিকে তিনি চেয়ারম্যানের দায়িত্বে বসার পর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। কমিশনের সুপারিশ করার ক্ষমতা থাকলেও তিনি নিজেই নির্দেশ দিয়ে লিখিত চিঠি পাঠিয়েছেন। এটি নিয়োগবিধির লঙ্ঘন।

এসব অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যান মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, সাবেক চেয়ারম্যানের এসব অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। দখলদারদের তালিকা তৈরির প্রক্রিয়ার সঙ্গে তিনি (মুজিবর রহমান হাওলাদার) জড়িত ছিলেন না। তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার পর আমি চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় ওই তালিকা তৈরি করা হয়। কিন্তু তালিকায় বেশ কিছু ভুল-ত্রুটি ধরা পড়ায় আমরা তা সংশোধন করছি। কোনোভাবেই তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

এমএইচএম/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।