হানিফ উড়ালসেতুর নিচের অংশের সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে: তাপস

মেয়র হানিফ উড়ালসেতুর নিচের অংশের সৌন্দর্যবর্ধন করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। একই সঙ্গে উড়ালসেতুর নিচের অংশ ঢাকাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী ব্যবহার উপযোগী করা হবে বলেও জানান তিনি।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) মেয়র হানিফ উড়ালসেতুর নিমতলী থেকে ফুলবাড়িয়া অংশে পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিএসসিসি মেয়র বলেন, মেয়র হানিফ উড়ালসেতুর নিচের অবস্থা খুব বেসামাল। বিভিন্নভাবে দখল অবস্থায় রয়েছে। খুবই নোংরা করে রাখা হয়েছে। এসব দখলমুক্ত করে উড়ালসেতুর নিচে সৌন্দর্যবর্ধন এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে ব্যবহার উপযোগী পরিবেশ নিশ্চিত করা হবে। সেই লক্ষ্যে আমরা পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দিয়েছি। আমরা আটটি অংশে (উড়ালসেতুর নিচের অংশকে) বিভক্ত করেছি। ঢাকাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী এবং এলাকার পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করেই আটটি অংশেই আমরা এখানে খুব দ্রুত কাজ শুরু করবো।
জনগণের চাহিদা প্রাধান্য দিয়েই উড়ালসেতুর নিচের অংশে সৌন্দর্যবর্ধন ও উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে জানিয়ে মেয়র তাপস বলেন, ঢাকাবাসীর চাহিদা বিবেচনা করে আমরা এখানে কাজ করবো। জনগণ এখানে সৌন্দর্যবর্ধন না যাতায়াত সুবিধা চায়, নাকি হাঁটার পথ কিংবা কোনো ধরনের অবকাঠামো চায়- এসব বিষয় আমরা পর্যালোচনা করবো। কারণ চাহিদা বিবেচনায় না নিয়ে কোনো কার্যক্রম নেওয়া হলে তা নগরবাসীর উপকারে আসবে না। আমরা পরিকল্পিতভাবে এগোচ্ছি। হয়তো একটু সময় নেবে। কিন্তু যখন এটা শেষ হবে তখন সবাই উপকৃত হবে।
কেমিক্যাল গোডাউন স্থানান্তর সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র তাপস বলেন, কেমিক্যাল গোডাউন স্থানান্তরে শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। আমাদের জানানো হয়েছিল যে, ডিসেম্বরের মধ্যেই এসব গোডাউন স্থানান্তর করা হবে। কিন্তু এখন জানুয়ারি পার হয়ে গেলো। এখানো স্থানান্তরিত হয়নি। আমি আশা করবো যে, এই ফেব্রুয়ারিতেই স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হবে। আমাদের শ্যামপুর শিল্পাঞ্চলে সেজন্য ঘর/গুদাম করা হয়েছে। সেখানে প্রাথমিকভাবে স্থানান্তর হওয়ার কথা। আমরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এসব গোডাউন স্থানান্তরে চাপ দিচ্ছি।
এ সময় বাহাদুর শাহ পার্ক নিয়ে করা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসসিসি মেয়র বলেন, বাহাদুর শাহ পার্ক নিয়ে ভ্রান্ত তথ্য দেওয়া হচ্ছে। আপনি যদি আজকেই সেখানে যান তাহলে দেখতে পাবেন যে, ওই এলাকার সব মানুষ সেটা উপভোগ করছে। ওই উদ্যান দখলে ছিল। সেখানে মাদকাসক্তরা ছিল, ভবঘুরেদের আনাগোনা ছিল। সেখান থেকে পরিত্রাণের জন্য আমরা উদ্যোগ নিয়েছি। সেখানে যারা ঘুরতে আসেন তারা যেন সেখানকার নান্দনিক পরিবেশ উপভোগ করতে পারেন। সেখানে আগত দর্শনার্থীদের খাওয়াদাওয়া নিশ্চিত করতে একটি অস্থায়ী খাবারের দোকান দেওয়া হয়েছে। ওই এলাকায় একটি আদালত রয়েছে। সেখানে বিশাল জনসমাগম হয়। তাদের মাধ্যমেই (যাদের ইজারা দেওয়া হয়েছে) আমরা পার্কটি পরিষ্কার রাখছি। মাদকাসক্ত ও ভবঘুরে মুক্ত রাখছি। আমরা এখন সেখানে বেষ্টনী দেবো এবং দুটো ফটক রাখবো। যাতে করে বাহাদুর শাহ পার্কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। সুতরাং বাহাদুর শাহ পার্কের ঐতিহ্য বিনষ্ট করার কোনো সুযোগ নেই। ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে আমরা জনকল্যাণে সেটার ব্যবহার নিশ্চিত করছি।
এর আগে মেয়র তাপস সবুজবাগের মানিকদিয়া ক্লাব সংলগ্ন এলাকায় ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র উদ্বোধন করেন।
এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, সচিব আকরামুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আশিকুর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আনিসুর রহমান ও কাজী মো. বোরহান উদ্দিন। এছাড়াও কাউন্সিলরদের মধ্যে ৫ নম্বর ওয়ার্ডের চিত্তরঞ্জন দাস, ৭৩ নম্বর ওয়ার্ডের মো. জিয়াউল হক, ৭৪ নম্বর ওয়ার্ডের মো. আজিজুল হক এবং সংরক্ষিত আসনের নাসরিন আহমেদসহ করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এমএমএ/কেএসআর/এএসএম