রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তার আহ্বান জাতিসংঘের

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১০:০০ এএম, ০২ জুন ২০২৩

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া বিপুল রোহিঙ্গা শরণার্থীর খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সহায়তার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি এ তথ্য জানায়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাননো হয়, ১ জুন থেকে কক্সবাজারে আশ্রিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মাসিক খাদ্য ভাউচার তিন মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার কমানো হচ্ছে। এটি হবে দৈনিক রেশনের ৩৩ শতাংশ হ্রাস। শরণার্থীদের প্রত্যেককে মাসিক মাত্র ৮ মার্কিন ডলার (৮৪০ টাকা) সমমূল্যের ফুড ভাউচার দেওয়া হবে। এটুকুই তাদের জীবন ধারণের একমাত্র অবলম্বন, অন্য কোনো বিকল্প তাদের নেই। এ অবস্থায় রোহিঙ্গা পরিবারের মা-বাবারা নিজেরা কম খাচ্ছেন, যেন তাদের সন্তানেরা খেতে পায়।

জাতিসংঘ মনে করছে, রেশনের এই কাটছাঁট প্রায় ১০ লাখ শরণার্থীর জীবনে প্রভাব ফেলবে। যারা খাদ্যসহায়তার ওপরেই নির্ভরশীল। যাদের জীবনধারণের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ বা কোনো সম্ভাবনা নেই।

জাতিসংঘ বলছে, চলতি বছরের শুরুতে রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) থেকে মাথাপিছু মাসিক ১২ মার্কিন ডলার মূল্যমানের রেশন পাচ্ছিলেন, যা দিয়ে শুধু তাদের দৈনিক চাহিদা মিটতো। কিন্তু অর্থায়নের অভাবে ১ মার্চ থেকে তাদের মাথাপিছু মাসিক রেশন কমিয়ে ১০ মার্কিন ডলার করা হয়। এখন তা আরও কমে ৮ মার্কিন ডলারে নেমেছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্যসহায়তা হ্রাস করা প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বাংলাদেশে জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইস বলেন, আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে বিশ্ব খাদ্য সংস্থা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্যসাহায্য কমাতে বাধ্য হচ্ছে। শরণার্থীদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ক্ষেত্রে এর ফল হবে ভয়াবহ। নারী, শিশু ও সবচেয়ে নাজুক মানুষেরা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তিনি বলেন, আমরা জরুরি ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার আবেদন জানাচ্ছি। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মানবিক সহায়তায়, তাদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা, পুষ্টি, খাদ্য ও শিক্ষার জন্য মোট যে পরিমাণ অর্থ দরকার তার মাত্র ২৪ দশমিক ৬ শতাংশের অর্থায়ন মেলে। বিপুল এ শরণার্থীদের সহায়তায় আর কোনো উৎস নেই। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে বসবাসকারী মানুষদের কর্মসংস্থানেরও সুযোগ নেই। তারা সম্পূর্ণভাবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবন রক্ষাকারী সহায়তায় এ নতুন কাটছাঁটের উদ্যোগ নেওয়া হলো এমন এক সময় যখন তারা বিধ্বংসী ঘূর্ণিঝড় মোখার তাণ্ডব আর একই সঙ্গে তাদের শিবিরগুলোতে ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ডের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছেন। ফলে এ মুহূর্তে হাজার হাজার শরণার্থীর সাহায্য ভীষণ প্রয়োজন।

এতে আরও বলা হয়, চলতি বছর রোহিঙ্গা শরণার্থীদের অবস্থা বিশেষভাবে নাজুক। কারণ, ৮৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তার যে আবেদন ২০২৩ সালে করা হয়েছে, ১ জুন নাগাদ তার মাত্র ২৪ দশমিক ৬ শতাংশ অর্থায়ন মিলেছে। এর ফলে অন্য জরুরি কর্মসূচি ও কর্মকাণ্ডেও কাটছাঁট করা হচ্ছে।

এএএম/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।