শপিংমল-হাসপাতাল-বিদ্যালয় ঘিরে সক্রিয় পকেটমার চক্র, টার্গেট নারীরা
রাজধানীতে এবার নারী পকেটমারের সন্ধান পেয়েছে ডিবি পুলিশ। চক্রের সদস্যরা সাধারণত বোরকা পরে বাচ্চা কোলে নিয়ে শপিংমল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, বাসস্ট্যান্ডে ঘুরে বেড়ান। সুযোগ বুঝে নারীদের ব্যাগ থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে যান। এসব সামগ্রী তারা কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তির কাছে বিক্রি করেন। এমনটি এক চক্রের ৯ নারী সদস্যসহ ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৪ জুন) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মশিউর রহমান।
মশিউর রহমান বলেন, মঙ্গলবার (১৩ জুন) রাজধানী লালবাগ থানার পিলখানা রোডের (আজিমপুর রোড) ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের (আজিমপুর শাখা) মেইন গেটের বিপরীত পার্শ্বে ও শাহবাগ থানার গুলিস্তান এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪০টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেফতাররা হলেন- মাহাবুব হোসেন (৩২), মোক্তার হোসেন (৪০), রফিকুল ইসলাম (৪২), ইমরান হোসেন (২০), বর্ষা আক্তার ওরফে মীম (২২), সুমি আক্তার প্রিয়া (২৩), শাবনুর (২৭), আলেয়া ওরফে আলো (২১), সাথী আক্তার (২৬) ছৈয়দ হালদার (৪০), আশরাফ ঢালী (৩৮), জাকির হোসেন (৩৯), ছকিনা বেগম (৪৩), সুজনা আক্তার ওরফে সুজিনা আক্তার ওরফে রুশকিনা (২৬), তানিয়া খানম (২৭), তাসলিমা খাতুন (৩৭)।
উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, কখনো বোরকা পরা পর্দানশীল নারী, আবার কখনো বাচ্চা কোলে স্নেহময়ী মা। পর্দানশীল মায়ের পরিচয়ে মুহূর্তেই ঢুকে যায় জনারণ্যে। চোখের পলকে নারী ও পুরুষের পকেট বা ব্যাগ কেটে নগদ টাকা, মোবাইল ও ব্যাগে রাখা স্বর্ণালংকার নিয়ে সটকে পড়েন। বিক্রি করে দেয় কিছু মহাজনের কাছে যারা লাখ টাকার একটি ঝকঝকে আই-ফোনের জন্য দেয় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা।
একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় রাজধানীর একটি শপিংমল থেকে এক নারীর ব্যাগ থেকে প্রায় ৫ লাখ টাকা নিয়ে দ্রুত কেটে পড়ছে চক্রের সদস্য আলেয়া। ১০ বছর বয়স থেকে সে মোবাইল চুরির কাজে যুক্ত হয়।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা মহানগরের নিউমার্কেট, আজিমপুরসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, স্কুল-কলেজ, মার্কেটে ও হাসপাতালে বিশেষ কৌশলে ব্যাগ বহনকারী নারী-পুরুষকে টার্গেট করে তাদের মোবাইল ও নগদ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। লালবাগ থানার আসামি মাহাবুব হোসেন, মোক্তার হোসেন, রফিকুল ইসলাম ও ইমরান হোসেনসহ কয়েকজন চুরি করার কাজে সরাসরি অংশ নেয়।
একইভাবে শাহবাগ থানার আসামিরা ঢাকা মহানগরের গুলিস্তান, গোলাপশাহ মাজার, ফুলবাড়ীয়াসহ বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, স্কুল-কলেজ, মার্কেটে ও হাসপাতাল ঘিরে সক্রিয় ছিল। এ চোর চক্রে তাদের আরও ২/৩ জন সহযোগী আছে। আসামি ছৈয়দ, আশরাফ ও জাকিরসহ কয়েকজন চুরি করার কাজে কখনো কখনো সরাসরি অংশ নেয়। গ্রেফতার আসামিদের বিরুদ্ধে ডিএমপির বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
আরএসএম/এমএএইচ/এমএস